শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: চীনা প্রতিষ্ঠান ডেস্টিনেশন এক্সপ্রেস ইন্টারন্যাশনাল (ডিইএক্স-আই) লিমিটেড আবারও মিথুন নিটিং অ্যান্ড ডাইংয়ের (বর্তমানে টয়ো নিটেক্স সিইপিজেড লিমিটেড) স্পনসরদের শেয়ার অধিগ্রহণের অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আবেদন করেছে।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিএসইসি মালিকানা হস্তান্তরের অনুমোদন বাতিল করেছিল। প্রায় ১০ মাস পর কোম্পানিটি নতুন করে আবেদন করল।

ডিইএক্স-আই লিমিটেড চীনের একটি সুপরিচিত কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে পোশাক খাতে অভ্যন্তরীণ সেবায় যাদের সুনাম রয়েছে। কোম্পানিটির একটি বিশ্বখ্যাত লজিস্টিকস গ্রুপের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বও রয়েছে। আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মিথুন নিটিংয়ের শেয়ারদর ছিল ১৬ টাকা। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ডিইএক্স-আই আগেরবার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছিল। পাশাপাশি বিএসইসির নির্দেশ অনুযায়ী বেসিক ব্যাংকের ঋণও পরিশোধ করা হয়নি।

বিএসইসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, নতুন আবেদনের পর প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটিকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে। ঋণ নিষ্পত্তি হলে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া এগোবে।

২০২৪ সালের জুনে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা এবং ব্যবসা পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে ডিইএক্স-আইকে মিথুন নিটিং অধিগ্রহণের অনুমোদন দিয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, মিথুন নিটিংয়ের মূল মালিক মরহুম মো. মজাম্মেল হকের উত্তরাধিকারী ও অন্যান্যদের হাতে থাকা ৫৪,৪৯,০৫৮টি শেয়ার ডিইএক্স-আইয়ের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল। উত্তরাধিকারীদের মধ্যে রয়েছেন রাবেয়া খাতুন, মো. রফিকুল হক, মো. মাহবুব-উল-হক, মো. আতিকুল হক, মো. রবিউল হক, সৈয়দা হাসিনা হক, মাহবুবা হক, মাহমুদা হক, মাহফুজা হক ও মনসুরা হক।

তখন বিএসইসি শর্ত দিয়েছিল স্পনসর ও পরিচালকদের সব সময় অন্তত ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখতে হবে, ২ শতাংশ বা তার বেশি শেয়ারধারী নতুন বিনিয়োগকারীদের বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, পরিচালকদের শেয়ার অতিরিক্ত তিন বছরের জন্য লক-ইন থাকবে, যা কোনো ঋণের জামানত হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। শেয়ার হস্তান্তর ব্যাংকিং চ্যানেলে করতে হবে এবং ৭ দিনের মধ্যে কমিশনকে রিপোর্ট দিতে হবে।

অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতাও ছিল। কিন্তু অনুমোদন পাওয়ার পর কোম্পানি কোনো শর্তই পূরণ করতে পারেনি। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ দেখিয়ে সময় বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত নেওয়ার আবেদন করলেও বিএসইসি তা প্রত্যাখ্যান করে।

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কারখানাটি সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে বন্ধ রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিরাপত্তা সংস্কার না করা এবং প্রায় ২০ কোটি টাকা বকেয়া থাকার কারণে বেপজা লিজ বাতিল করে। বিদেশি ক্রেতাদের ব্ল্যাকলিস্টে পড়ার পর অর্ডার বন্ধ হয়ে যায়। বকেয়া মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় বেপজা শ্রমিকদের বেতনসহ অন্যান্য দেনা পরিশোধের জন্য কারখানার সম্পদ নিলামে বিক্রি করে।

১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিথুন নিটিংয়ের ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত মালিকানা কাঠামো হলো: স্পনসর-পরিচালক ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারী শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারী ৬৭ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।