সোনালী পেপার মিলসের ৫ বছরের মুনাফা ও লভ্যাংশের হালচাল
                শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কাগজ ও প্রকাশনা খাতের কোম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেডের গত ৫ বছরের মুনাফা ও লভ্যাংশ ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। কোম্পানিটি ওটিসি মার্কেট থেকে মুল মার্কেটে ২০২০ সালে ফেরার পর থেকে শেয়ারহোল্ডারদের আস্থা অর্জন করছে। কোম্পানিটি গত ৩০ জুন, ২০২৫ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে।
২০২৪ সালে ৪০ শতাংশ নগদ, ২০২৩ সালে ৪০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ৪০ শতাংশ নগদ, ২০২১ সালে ২০ শতাংশ স্টক, ২০২০ সালে ৫ শতাংশ নগদ ঘোষণা করেছিল। কোম্পানিটির লভ্যাংশ ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। তবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা ও লভ্যাংশে চমক দেখিয়েছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র অনুসারে, সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭ টাকা ১৭ পয়সা। ২০২৪ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৩ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৪ টাকা ৭৪ পয়সা। ২০২২ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৬ টাকা ০৩ পয়সা। ২০২১ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ৪ টাকা ৪৯ পয়সা। ২০২০ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল ১ টাকা ৬১ পয়সা। গত বছরে কোম্পানিটির মুনাফা ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে। তবে ২০২৪ সালে মুনাফা কিছুটা ভাটা পড়লেও লভ্যাংশ কমেনি।
সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ১৪ টাকা ৮৬ পয়সা। আগের বছর ক্যাশ ফ্লো ছিল ১০ টাকা ৩৯ পয়সা। গত ৩০ জুন, ২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৬৭ টাকা ৯০ পয়সা। আগামী ১৮ ডিসেম্বর, সকাল ১১ টায় ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ নভেম্বর।
সম্প্রতি কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ একটি চালু পেপার মিল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোম্পানিটির উৎপাদন ও বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে বাড়তি চাহিদা মেটাতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) সোনালী পেপারের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৪৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ৪০ পয়সা।
আলোচ্য হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৭২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১৭ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬৬ টাকা ২১ পয়সায়।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সোনালী পেপারের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৭৯ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৭৪ পয়সায়। ৩০ জুন ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ১৬৪ টাকা ৭৩ পয়সায়।
সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে সোনালী পেপারের ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৭৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ২ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৩ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৬৪ টাকা ৯৪ পয়সায়। ২০২১-২২ হিসাব বছরে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৪ টাকা ৭ পয়সা। ৩০ জুন ২০২২ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৪১ টাকা ৩০ পয়সায়।
২০২০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী পেপারের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৩২ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৫০৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৮৮। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৬৭ দশমিক ৫১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭ দশমিক ২০ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৫ দশমিক ২৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
সোনালি পেপার মিলস ১৯৭৭ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করলেও ১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ইউনুস গ্রুপ ২০০৬ সালে কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে। সোনালি পেপার মিলস বিভিন্ন ধরনের কাগজ উৎপাদন করে।

