হাক্কানী পাল্প পেপার মিলসের পাঁচ বছরের মুনাফা ও লভ্যাংশের হালচাল
                শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কাগজ ও প্রকাশনা খাতের কোম্পানি হাক্কানি পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড ৩০ জুন ২০২৫ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, ২০২৩ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, ২০২২ সালে কোম্পানিটি ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, ২০২১ সালে কোম্পানিটি ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল, ২০২০ সালে কোম্পানিটি ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। তবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি সব্বোর্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ পয়সা, ২০২৪ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৪ পয়সা। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৮৯ পয়সা। ২০২২ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ১ টাকা ৩০ পয়সা। ২০২১ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা। ২০২০ সালে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৭ পয়সা। মুলত গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২৩ সালে কোম্পানিটির মুনাফা বাড়লেও সমাপ্ত অর্থবছরে সব্বোর্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
সমাপ্ত অর্থবছর শেষে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ (ক্যাশ ফ্লো) দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৯৪ পয়সা, যেখানে আগের বছর ছিল ৭ টাকা ১৫ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯২ পয়সা। কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আগামী ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ সকাল ১১টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এজিএমে অংশগ্রহণের জন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ নভেম্বর ২০২৫।
এদিকে কোম্পানিটির গ্যাস খরচ কমাতে নতুন দুটি মেশিন কেনা ও স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস পিএলসির পর্ষদ। এগুলো হলো একটি গরম পানি উৎপাদন মেশিন ও একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এগজস্ট গ্যাস বয়লার (ইজিবি বয়লার) মেশিন। গত ৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পর্ষদ সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যানুসারে গরম পানি উৎপাদন মেশিন বিদ্যমান গ্যাস জেনারেটরের গরম পানি ব্যবহার করে অতিরিক্ত বাষ্প তৈরি করবে। এজন্য আলাদা কোনো খরচ হবে না। ফলে কোম্পানিটির মাসে প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ টাকার গ্যাস বিল কমবে এবং বছরে প্রায় ৩৮ লাখ টাকা বাড়তি নিট মুনাফা হবে। এ মেশিন কেনা ও স্থাপনসহ হাক্কানী পাল্পের মোট ব্যয় হবে ৪০ লাখ টাকা, যা তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
অন্যদিকে ইজিবি বয়লার বিদ্যমান গ্যাস জেনারেটরের নির্গত ধোঁয়া ব্যবহার করে মাসে প্রায় ২৪ টন বাষ্প উৎপাদন করবে। এজন্য আলাদা কোনো খরচ হবে না। ফলে কোম্পানিটির মাসে প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮০০ টাকা গ্যাস বিল কমবে এবং বছরে প্রায় ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বাড়তি নিট মুনাফা হবে। এ মেশিন ক্রয় ও স্থাপনে হাক্কানী পাল্পের মোট ব্যয় হবে ৪০ লাখ টাকা, যা তাদের তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) হাক্কানী পাল্পের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২৮ পয়সা, আগের হিসাব বছরের যা ছিল ৩ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৩১ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২৫ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪৫ পয়সায় (পুনর্মূল্যায়িত)।
সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে হাক্কানী পাল্পের ইপিএস হয়েছে ৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৮৯ পয়াস। ৩০ জুন ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ২৯ পয়সায় (পুনর্মূল্যায়িত)।
সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য হিসাব বছরে হাক্কানী পাল্পের ইপিএস হয়েছে ৮৯ পয়সা। আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৩০ পয়সা। ৩০ জুন ২০২৩ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ২৪ টাকা ৪৫ পয়সায় (পুনর্মূল্যায়িত)।
হাক্কানী পাল্পের সার্ভিল্যান্স এনটিটি রেটিং দীর্ঘমেয়াদে ‘ট্রিপল বি ওয়ান’ ও স্বল্পমেয়োদে ‘এসটি থ্রি’। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৪ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩১ মার্চ ২০২৫ ব্যাংক ঋণের অবস্থা এবং রেটিং ঘোষণার দিন পর্যন্ত প্রাসঙ্গিক অন্যান্য পরিমাণগত ও গুণগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রত্যয়ন করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিআরএবি)।
২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হাক্কানী পাল্পের অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৯ কোটি টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ২৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৯০ লাখ। এর ৪৭ দশমিক ২৮ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪ দশমিক ১৫ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

