india westশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা:  বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কেঁদে-ককিয়ে জিতলেও সেমিফাইনালে এসে শেষ রক্ষা হয়নি ভারতের। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে গোটা ভারতকে কাঁদিয়ে আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাগতিক ভারতকে সেমিতেই বিদায় করে দিল ক্যারিবিয়ানরা। ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ৩ মার্চ কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ট্রফি জয়ের মঞ্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে ড্যারেন স্যামির দল। উল্লেখ্য, মহিলাদের টি-২০ বিশ্বকাপেও ফাইনালে উঠেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মহিলা দল।

কোহলির হাফ সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ১৯২ রানের বড় স্কোর গড়ে ভারত। জবাবে জনসন চার্লস ও লেন্ডল সিমন্সের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ১৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৬ রান তুলে ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২ বল আগে আসা জয়ে ম্যাচ সেরা হন লেন্ডল সিমন্স।

ভারত বড় স্কোর গড়লেও ভড়কে যায়নি উইন্ডিজরা। কারণ কথিত আছে ওয়াংখেড়ে সব রানই তাড়া করে ফেলে দলগুলো। যেমনটা গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৯ রান টপকে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ‘বাজির ঘোড়া’ ক্রিস গেইলের (৫) উইকেট হারিয়ে বসে ড্যারেন স্যামির দল। দলীয় ১৯ রানে স্যামুয়েলসও (৮) রাহানের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরলে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

তৃতীয় উইকেটে চার্লস ও সিমন্স দলকে বিপদমুক্ত করেন। তারা ৯৭ রান যোগ করেন। এ জুটিই ক্যারিবিয়ানদের চাপটা কমিয়ে দেয়। দলকে এগিয়ে দেয় রান তাড়া করার মিশনে। ১৪তম ওভারে চার্লসকে ফেরান কোহলি। তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি করা চার্লস ৩৬ বলে ৫২ রান করেন। পরে তান্ডব শুরু করেন আন্দ্রে রাসেল ও সিমন্স। তাদের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ভারত। রান-বলের সমীকরণও ধীরে ধীরে উতরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বিশাল বিশাল সব ছক্কা মারতে থাকেন সিমন্সরা। কোহলির করা শেষ ওভারে ছক্কা মেরেই জয় নিশ্চিত করেন রাসেল। ২০ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের (৩ চার, ৪ ছয়) ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। তবে দলের জয়ে বড় অবদান সিমন্সের। তিনবার জীবন পাওয়া এ ডানহাতি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন।

পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন তিনি। একপ্রান্ত আগলে খেলে গেছেন দলের জন্য নিবেদিত এক ম্যাচজয়ী ইনিংস। ৫১ বলে ৮২ রানের অনন্য সাধারণ ইনিংস খেলে অপরাজিত করেন সিমন্স। যেখানে ছিল ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা। ভারতের নেহেরা, বুমরাহ ও কোহলি ১টি করে উইকেট পান।

এর আগে ‘ব্যাটিংয়ের রাজা’ কোহলি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও স্বরুপে ধরা দিয়েছেন ওয়াংখেড়ে। ব্যাট হাতে একাই ভারতের বিশ্বকাপ ভাগ্যই গড়ে দিচ্ছেন তিনি। ইনিংস জুড়ে চারবার জীবন পেলেও তার ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফ সেঞ্চুরিই ভারতকে এনে দিয়েছিল বিশাল স্কোর।

ভারতের ইনিংস আবর্তিত হয়েছে তার ব্যাটকে ঘিরে। দ্বিতীয় উইকেটে আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ৬৬ ও তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়েন কোহলি। যেখানে ধোনির অবদান ছিল মাত্র ১৫ রান। এ দুটি জুটিই ভারতীয় ইনিংসের মূল জ্বালানি।

ডোয়াইন ব্র্যাভোর করা ৯ম ওভারে দুবার নিশ্চিত রান আউট থেকে বেঁচে গেছেন বিরাট কোহলি। পরে বার্থওয়েট ও সিমন্স দুবার ক্যাচ ফেলেছেন তার। ৩৩ বলে পূর্ণ করেন হাফ সেঞ্চুরি। কোহলির ব্যাটিং তান্ডবে দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্যারিবিয়ান বোলাররা। ৪৭ বলে ৮৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

একটু রয়ে সয়েই ব্যাটিং শুরু করলেও রোহিত শর্মা ও রাহানের ওপেনিং জুটি ৬ ওভারেই ৫৫ রান তোলে। রোহিত শর্মার ব্যাট ক্রমেই অগ্নিশর্মা হতে যাচ্ছিল। অষ্টম ওভারে তাকে থামিয়েছেন স্যামুয়েল বদ্রি। দলীয় ৬২ রানে এলবির ফাঁদে পড়েন রোহিত। তিনি ৩১ বলে ৪৩ রান (৩ চার, ৩ ছয়) করেন।

রোহিতের মতোই হাফ সেঞ্চুরি মিস করেছেন রাহানে। ১৬তম ওভারে আন্দ্রে রাসেলের বলে বাউন্ডারিতে দারুণ ক্যাচ ধরেন ডোয়াইন ব্র্যাভো। রাহানে ৩৫ বলে ৪০ রান করেন। স্যামুয়েল বদ্রি ও আন্দ্রে রাসেল ১টি করে উইকেট পান।