শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: প্রতিটি অর্থবছরেই বাজেটের আকার বাড়ছে। বাড়ছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)’র আকারও। কিন্তু সে অনুপাতে বাড়ছে না বিনিয়োগ আর কর্মসংস্থান। গত নয় বছরে জাতীয় বাজেট তিন গুণ বাড়লেও পুঁজিবাজারে মূলধন বাড়েনি দিগুণও। কিন্তু কোনো দেশের অর্থনীতির ইন্ডিকেটর হলো সে দেশের পুঁজিবাজার। আর দেশের শেয়ারবাজারের দিকে তাকালেই বুঝা যায় দেশে বিনিয়োগ নেই। উন্নত দেশেগুলোতে জিডিপির ১০ গুণ পুঁজিবাজারের মূলধন।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজার নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে অনেকেই আসন্ন রাজনীতি নিয়ে প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদেরকে সচেতন হতে হবে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ২ হাজার কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। সম্প্রতি ড. এম খায়রুল হোসেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণের সাথে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন।

এছাড়া পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য চীনা কনসোর্টিয়াম থেকে প্রাপ্ত অর্থে ১০ শতাংশ ক্যাপিটাল গেইন মওকুফ করা হয়েছে। এতে পুঁজিবাজারে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ হবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রদত্ত অর্থমন্ত্রীর সুপারিশগুলোর মধ্যে কিছু বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা হচ্ছে। যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের পেছনে ফেরার কোন সুযোগ নেই। এই শেয়ারবাজারের উজ্জল ভবিষ্যত ও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও আমরা অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছি। এক্ষেত্রে সম্প্রসারণের অনেক সুযোগ রয়েছে। কারণ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারের কোন বিকল্প নেই। আর বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে ভবিষ্যতে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সবাই পুঁজিবাজারের প্রতি ঝুঁকবে।

অত্যাধুনিক সার্ভিলেন্স সফটওয়্যার স্থাপনের ফলে শেয়ার লেনেদেনে কেউ অসৎ উপায় অবলম্বন করলে, তা সঙ্গে সঙ্গে সনাক্ত করা সম্ভব বলে জানান খায়রুল হোসেন। যাতে শেয়ারবাজারে আরেকটি ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের মতো ধস সৃষ্টির সুযোগ নাই। যেখানে বিগত কয়েক বছরে নানা সংস্কারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান কমিশনের কাজের সফলতায় বিএসইসি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসে (আইওএসসিও) বিএসইসি ‘এ’ ক্যাটাগরি অর্জন করেছে। এছাড়া বিএসইসির সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নিজস্ব ভবন তৈরী করা হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজস্ব অর্থায়নে ১০ তলা বিশিষ্ট ভবন তৈরী করা হয়েছে।

জিডিপিতে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের অবদান তুলনামূলক কম বলে জানান খায়রুল হোসেন। যা মাত্র ২০ শতাংশ। হংকংয়ে যেখানে ৪০০ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশের শেয়ারবাজার এখনো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর ও বিদেশীদের লেনদেন ৫ শতাংশ। কিন্তু অন্যান্য দেশের শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ৭০-৮০ শতাংশ। আর বিদেশীদের লেনদেনে অংশগ্রহণ থাকে ৪০ শতাংশ। যা আমাদের দেশের শেয়ারবাজারেও হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।