শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ২০টি কোম্পানির রিজার্ভ নেগেটিভ। নেগেটিভ রিজার্ভের কোম্পানি হিসাবে কোম্পানিগুলোর সম্পদ মূল্যও নেগেটিভ। অর্থাৎ কোম্পানিগুলোর নিজস্ব সম্পদ বলতে কিছু নেই। কোম্পানিগুলো কোন রকমে ধারে বা কর্জে চলছে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়, মিউচ্যুয়াল ফান্ড বাদে বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানির সংখ্যা ২০৬টি। এর মধ্য ১৮৬ কোম্পানির কমবেমি রিজার্ভ থাকলেও ২০টি কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে নেগেটিভ বা নেতিবাচক।

নেগেটিভ রিজার্ভের কারণে কোম্পানিগুলোর সম্পদমূল্যও নেগেটিভ এবং অর্থপ্রবাহও নেগেটিভ। ধারে-কর্জে কোম্পানিগুলো চলছে বিধায় এসব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনও থাকে বড় গড়মিল। এসব কোম্পানিতে যেকোন সময়ে বড় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং পুঁজিবাজার বিশ্লেষক প্রফেসর আবু আহমেদ বলেন, নেগেটিভ রিজার্ভর কোম্পানি মানেই অস্তিত্ব সংকটের কোম্পানি। কোম্পানিগুলোর নিজস্ব সম্পদ হারিয়ে এখন ধারে-কর্জে চলছে। যেকোন সময় এসব কোম্পানির বড় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের অনেক সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হতে পারে।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রিজার্ভের টাকা বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির আস্থার হাতিয়ার। রিজার্ভ ফান্ড কোম্পানিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখে এবং বিনিয়োগকারীদেরও স্বার্থ রক্ষা করে।

কিন্তু লোকসানি এ দুয়ের কোনটিই রক্ষা করতে পারে না। অন্যদিকে, লোকসানি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনেও অনেক গড়মিল থাকে। বিচার-বিশ্লেষণ না করে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ না করাই উত্তম।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, রিজার্ভের কোম্পানি যেকোন আপদকালীন সময়ে বিনিয়োগকারীরের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়। কিন্তু নেগেটিভ রিজার্ভের কোম্পানি সব আর্থিক অনিয়মের মধ্যে চলে এবং বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর পথে থাকে। এসব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন কদাচিত ফেয়ার বা স্বচ্চ হয়।

পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত ২১ কোম্পানি হলো-শ্যামপুর সুগারের শেয়ারপ্রতি নেগেটিভ রিজার্ভ ৬৬৯.০২ টাকা, জিলবাংলা সুগারের ৪২৮.০৩ টাকা, জুট স্পিনার্সের ১৫৭.৪৭ টাকা, আজিজ পাইপের ৮২.১০ টাকা, মেঘনা কনডেন্স মিল্কের ৪৬.১৯ টাকা, রেনউইক যজেনশ্বরের ৪২.৭০ টাকা, দুলামিয়া কটনের ৩৮.৬৬ টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ২৫.৭২ টাকা, কেএন্ডকিউর ২১.৪৪ টাকা,

মেঘনা পেটের ১৩.২০ টাকা, বিডি অটেকারসের ৭.২২ টাকা, রহিমা ফুডের ৭.১৮ টাকা, বিআইএফসির ৬.৮৬ টাকা, মডার্ন ডাইংয়েরস ৫.২৬ টাকা, বিডি সার্ভিসের ৩.৯১ টাকা, ইমাম বাটনের ৩.৭৮ টাকা, সাভার রিফেক্টরিজের ৩.৭৩ টাকা,

ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৩.৬৩ টাকা, এরামিট সিমেন্টের ১.৩৫ টাকা, মাইডাস ফাইন্যান্সের শেয়ারপ্রতি নেগেটিভ রিজার্ভ ০.৪০ টাকা।