garmentsশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের ১১ কোম্পানির মুনাফা চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারের বস্ত্রখাতের শেয়ারের উপর। কমেছে এ খাতে তালিকাভুক্ত ১১ কোম্পানি আয়।

একইসঙ্গে সুশাসন পরিপালনে ব্যর্থ, বিশ্ববাজারে ব্যবসায়িক মন্দার কারণেও দেশের বস্ত্রখাতের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে বর্তমান সময়ে অর্ডার বৃদ্ধি পাওয়ায় গত প্রান্তিকের কম আয় বা লোকসান আগামীতে পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারে বস্ত্রখাতের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৫টি। এরমধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ খাতে আয় কমেছে  ১১ প্রতিষ্ঠানের। এছাড়া রফতানিতে সামান্য নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের আয়ে হোচট খেয়েছে।

আয় কম হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মডার্ণ ডায়িং, এইচ আর টেক্সটাইল, মতিন স্পিনিং, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, অলটেক্স ও স্কয়ার টেক্সটাইল, রিজেন্ট টেক্সটাইল, এনভয় টেক্সটাইল, জাহিন স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং, সাফকো স্পিনিং লিমিটেড।

প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আয় কমে যাওয়ার কোম্পানিগুলোর মধ্যে মডার্ণ ডাইং লিমিটেডের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৫ পয়সা। সে হিসেবে এক বছরে কোম্পানির ইপিএস কমেছে ৩ পয়সা।

এইচআর টেক্সটাইল প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ২৩ পয়সা। আগের বছরের ইপিএস হয়েছিল ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানের ইপিএস কমেছে ৩৫ পয়সা। সোনারগাঁও টেক্সটাইলস লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৪৫ পয়সা।

মতিন স্পিনিংয়ের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ৩ পয়সা। প্রতিষ্ঠানের আয় কমেছে ৫৯ পয়সা। অলটেক্স লিমিটেড প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসানের পরিমাণ ৩৮ পয়সা। আর  ইপিএস কমেছে ৯ পয়সা।

বস্ত্রখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তৈরি পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে টেক্সটাইল খাত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যখন তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় কমে তখন টেক্সটাইল খাতের আয়ও কমে। রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ক্রয় আদেশ কম থাকে। তবে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ক্রয় চাহিদা বেশি থাকে।

এ তিন মাস অতিরিক্ত কাজ পায় বস্ত্রখাতের প্রতিষ্ঠাগুলো। ফলে প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর প্রভাব পড়ে আরো তিন মাস পর। আর তাই বর্তমানে বস্ত্রখাতে বেশ ভালো কোম্পানিগুলোর ইপিএসে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে ভবিষ্যতে তা ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।

তথ্যমতে, বস্ত্রখাতের মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেডের ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৭ পয়সা।

এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সালাম মোর্শেদী বলেন, বছরের শুরুতে বিশ্ববাজারে ব্যবসা পরিস্থিতি মন্দা ছিল। তাছাড়া ওই সময়ে অর্ডার কম থাকায় প্রথম প্রান্তিকের ইপিএসে প্রভাব পড়েছে। তবে বর্তমান সময়ে অনেক অর্ডার আছে, ফলে যে পরিমাণ ইপিএস কমেছে তা বছর শেষে পুষিয়ে নেয়া যাবে।

রিজেন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড ইপিএস হয়েছে ২৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫ পয়সা। কোম্পানির কর্মকর্তা উজ্জল বিশ্বাস বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। তবে আগের বছরের চেয়ে শেয়ারের পরিমাণ বাড়ার কারণে ইপিএস কমেছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) প্রথম ৪ মাস (জুলাই-অক্টোবর) তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয় হয়েছে ৮৮২ কোটি ১৪ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৮ কোটি ৯৬ লাখ বা ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। চার মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫১ কোটি ১০ লাখ ডলার।