investশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের ২০টি কোম্পানির একটি তালিকা করেছে। তালিকায় উৎপাদনমুখী বহুজাতিক কোম্পানি যেমন রয়েছে, একই সঙ্গে রয়েছে দেশীয় কোম্পানিও। খাতভিত্তিক বিবেচনায় তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। পণ্য বিক্রি ও নিট মুনাফায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ভালো মূলধনি মুনাফা।

শীর্ষ কোম্পানি নির্বাচনে ৫০০ কোটি টাকা বাজার মূলধন রয়েছে, এমন কোম্পানিকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বিবেচনায় নেয়া হয়েছে পণ্য বিক্রি ও নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি, পিই রেশিও (মূল্য-আয় অনুপাত) ও ডিভিডেন্ড ঈল্ডও (প্রকৃত লভ্যাংশ)। তবে প্রধান বিবেচ্য বিষয় ছিল বিনিয়োগের বিপরীতে মূলধনি মুনাফা।

শীর্ষ কোম্পানি নির্বাচনে সময়কাল ধরা হয়েছে ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত। আর মূলধনি মুনাফা হিসাবের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে ২০১২ সাল থেকে চলতি বছরের ২০ জুন অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত সময়কে।

সারা বিশ্বেই কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভ্যাংশ ১ শতাংশ বা এর কাছাকাছি থাকে। তবে দেশীয় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সেরা কোম্পানিগুলোর প্রকৃত লভ্যাংশের পরিমাণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১ শতাংশের বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশও ছাড়িয়ে যেতে দেখা গেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড ঈল্ডের চেয়ে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে মূলধনি মুনাফা। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দেশীয় সেরা কোম্পানিগুলোর কোনো কোনোটি থেকে সর্বোচ্চ ৭৫৩ শতাংশ পর্যন্ত মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে বেশি মূলধনি মুনাফা পেয়েছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ থেকে। দেশে বিস্কুটের বাজারের বড় অংশ দখল করে আছে কোম্পানিটি। উন্নত প্রযুক্তি ও উৎপাদনসক্ষমতা বাড়ানোয় কোম্পানিটির পণ্য বিক্রির পরিমাণ নিয়মিত হারে বাড়ছে। চার বছরে অলিম্পিকের নিট মুনাফা বেড়েছে ১৩৫ শতাংশ।

২০১২ সাল থেকে সোমবার পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন বেড়েছে ৭৫৩ শতাংশ। বর্তমানে কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন ৬ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা, যা বাজার মূলধনে শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ষষ্ঠ। এ কোম্পানির মোট শেয়ারের ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের।

ওষুধের বাজারের প্রায় ১৯ শতাংশ দখলে রয়েছে ওষুধ খাতের শীর্ষ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে এ কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। আর এ সময় নিট মুনাফা বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। অবশ্য চলতি হিসাব বছরে বিক্রি ও মুনাফায় প্রবৃদ্ধির হার আরো বেশি।

চার বছরে বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ১৫৮ শতাংশ। সোমবার কোম্পানিটির বাজার মূলধন ১৬ হাজার ১৭৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা বাজার মূলধনে শীর্ষ কোম্পানি তালিকার তৃতীয়।

উৎপাদনমুখী কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিট মুনাফায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি (বিএটিবিসি)। উচ্চ করহারের কারণে গত বছর কোম্পানিটির নিট মুনাফা কিছুটা কমলেও ২০১২ সালের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে এ সময়ে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে উল্লেখযোগ্য মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

২০১২ সালে বিএটিবিসির শেয়ারের বাজার মূলধন ছিল ৫ হাজার ৩৭ কোটি টাকা, যা সোমবার ১৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে চার বছরে ২১৮ শতাংশ মূলধনি মুনাফা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।

বর্তমানে শেয়ারবাজারের সবচেয়ে দামি শেয়ার হচ্ছে এ কোম্পানির। সোমবার এ কোম্পানির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ২ হাজার ৭০৩ টাকা ৭০ পয়সা। বাজার মূলধনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিএটিবিসি।

উতৎপাদন সক্ষমতার প্রায় পুরোটা ব্যবহার করায় ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির রেভিনিউয়ে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। ভারতে ক্লিংকার খনির জটিলতা নিরসন হওয়ায় লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা দেয়।

২০১০-১১ সালে লোকসানে থাকলেও ২০১২ সালেই কোম্পানিটি মুনাফায় ফেরে। এর পর প্রতি বছরই কোম্পানির মুনাফায় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেখা দিলেও ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী ক্লিংকারের দরপতনে মুনাফা খানিকটা কমেছে লাফার্জের।

তবে বিশ্বব্যাপী লাফার্জ ও হোলসিম সিমেন্টের একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরুর কারণে দেশে এর শেয়ারদর বাড়ছে। এতে কোম্পানির বাজার মূলধনও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১২ সালের তুলনায় বর্তমানে কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে ১২২ শতাংশ। যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদে এ কোম্পানির শেয়ার ধারণ করেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফাও একই হারে বেড়েছে।

লাফার্জ সুরমাসহ চারটি বহুজাতিক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন মাসুদ খান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো করপোরেট ইমেজ, পরিবেশ, পেশাদারিত্ব ইত্যাদি কারণে সেরা কর্মী নিয়োগ দিতে পারছে।

পাশাপাশি সময়োপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। কোম্পানির সাফল্যে এরাই প্রধান ভূমিকা রাখেন। এর বাইরে পণ্য উৎপাদনে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, ব্র্যান্ডিং ও ভোক্তা আস্থার কারণে এসব কোম্পানি পণ্য বিক্রিতে বাড়তি সুবিধা পায়, যা বিক্রি ও মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রসঙ্গে মাসুদ খান বলেন, বহুজাতিক কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা থাকায় বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিন্তে এর ওপর আস্থা রাখতে পারেন। দেশীয় কোম্পানির তুলনায় বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের পরিমাণও অনেক বেশি; যার ফলে শেয়ারবাজারে এসব কোম্পানির শেয়ারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ৬১ শতাংশ। এ সময় কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও কোম্পানির পণ্য বিক্রি ও মুনাফার ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। মুনাফার ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় শেয়ারবাজারে এ কোম্পানির শেয়ারদর ঈর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে।

২০১২ সালের তুলনায় এ কোম্পানির বাজার মূলধন ৩২২ শতাংশ বেড়েছে। ডিএসইর শীর্ষ বাজার মূলধনি কোম্পানির তালিকায় বার্জারের অবস্থান নবম। শেয়ার মূল্যের তুলনায় এ কোম্পানির প্রকৃত লভ্যাংশের হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১২ সাল থেকে সোমবার পর্যন্ত এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে ৩২২ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

চার বছরে বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের নিট মুনাফা বেড়েছে ১০৯ শতাংশ। দেশীয় ইস্পাত শিল্পে শীর্ষ এ কোম্পানির ২০১৫ সালে নিট মুনাফা হয় ২০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ২০১২ সালে যার পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৫ সালে এ শেয়ারে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভ্যাংশের হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এ কোম্পানির মূল্য আয় অনুপাত ১৪ দশমিক ৪২।

বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী বলেন, ব্যবসায় আমরা সততা বজায় রাখি। কাউকে ঠকাই না। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। মূলত এটিই আমাদের সাফল্যের চাবিকাঠি। এসব কারণে শেয়ারহোল্ডাররাও আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন।

শেয়ারবাজারের সেরা কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রকৃত লভ্যাংশের হার সবচেয়ে বেশি হাইডেলবার্গ সিমেন্টের। কোম্পানিটি তিন বছর ধরে ৩০০ কিংবা এর বেশি হারে লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। ২০১৫ সালে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রকৃত লভ্যাংশ পেয়েছেন।

২০১২ সাল থেকে যেসব বিনিয়োগকারী এ কোম্পানির শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফা প্রায় ৯৬ শতাংশ। এ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের বাজার মূলধন ১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা থেকে ২ হাজার ৯৩০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

আরএকে সিরামিকে বিনিয়োগের বিপরীতে প্রকৃত লভাংশ হচ্ছে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। লোকসানি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বিক্রির পর কোম্পানির মুনাফা বাড়তে দেখা গেছে। ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে আরএকে সিরামিকের নিট মুনাফা প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়েছে।

চার বছরে বাটা সুর সম্পদ মূল্য বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। অর্থাৎ যারা ২০১২ সালে বাটা সুর শেয়ারে বিনিয়োগ করে এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছেন, তাদের শুধু মূলধনি মুনাফা হয়েছে ১১৭ শতাংশ। এর বাইরে রয়েছে লভ্যাংশ থেকে প্রাপ্ত আয়।

দেশে ইলেকট্রনিকস পণ্য বিক্রিতে একসময়ের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ছিল সিঙ্গার বাংলাদেশ। ২০০৯ সাল পর্যন্ত শেয়ারবাজারের সবচেয়ে দামি শেয়ার ছিল এটি। ধারাবাহিকভাবে বোনাস শেয়ার ঘোষণায় কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়লেও সে তুলনায় মুনাফা বাড়েনি।

তার পরও দীর্ঘমেয়াদে এ কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ থেকে উল্লেখযোগ্য মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ২০১২ সালে এ কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূলধন ছিল ৬৪৪ কোটি টাকা, যা সোমবার ১ হাজার ১৪৬ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ইলেকট্রনিকস পণ্যে প্রতিযোগী বেড়ে যাওয়ায় ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে এ কোম্পানির নিট মুনাফা কিছুটা কমে গেছে।

২০১২ সালে ম্যারিকো বাংলাদেশের নিট মুনাফা ছিল ৫৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, যা ২০১৫ সালে ১৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত হয়। চার বছরে কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ১৫১ শতাংশ। এ সময়ে যারা এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ধরে রেখেছেন, তাদের শুধু মূলধনি মুনাফাই হয়েছে ২৩৫ শতাংশ। এ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঈল্ড ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনে চার বছরে বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফা হয়েছে ২০৩ শতাংশ।

নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে এসিআই লিমিটেড। ২০১২ সালে ১৬ কোটি টাকা লোকসান হলেও পরের বছরই তা কাটিয়ে ওঠে তারা। ২০১৫ সালে কোম্পানিটির নিট মুনাফা ছিল ৭৬ কোটি টাকা। ২০১২ সাল থেকে যেসব বিনিয়োগকারী এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ ধরে রেখেছেন, তাদের মূলধনি মুনাফা হয়েছে ৪৩২ শতাংশ।

চার বছরে কোম্পানির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। সেরা কোম্পানির তালিকায় এসিআইয়ের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসিআই ফর্মুলেশনস লিমিটেডও রয়েছে। চার বছরে এ কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে ৫২ শতাংশ। আর দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীরা এ সময়ে ১০৪ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছে।

গত চার বছরে রেনাটার নিট মুনাফা বেড়েছে ৭৪ শতাংশ। ওষুধ খাতের শীর্ষস্থানীয় এ কোম্পানিটি প্রতি বছরই উচ্চ মুনাফায় রয়েছে। বিনিয়োগকারীর আগ্রহে কোম্পানির শেয়ারদরও বাড়ছে। আর্থিক প্রতিবেদন স্বচ্ছতা ও ভালো ব্যবস্থাপনার কারণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশী বিনিয়োগও রয়েছে কোম্পানিটির শেয়ারে। গত চার বছরে বিনিয়োগকারীরা এ কোম্পানির শেয়ার থেকে ১৯০ শতাংশ মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন।

কয়েক বছর ধরেই ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। গত চার বছরে এ কোম্পানির পণ্য বিক্রি বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। এ সময়ে নিট মুনাফা বেড়েছে ১৬৫ শতাংশ। মুনাফা বাড়ায় সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

গত চার বছরে এ কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারীরা মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ২৮৭ শতাংশ। বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান রেকিট বেনকিজার থেকে বিনিয়োগকারীরা মূলধনি মুনাফা পেয়েছেন ১১৪ শতাংশ।

এছাড়া একই সময়ে ওষুধ শিল্পের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মায় ৮৪ শতাংশ, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল থেকে ৪৫ শতাংশ মূলধনি মুনাফা এসেছে। আর এনভয় টেক্সটাইলসে মূলধনি মুনাফা না হলেও বিনিয়োগের বিপরীতে তুলনামূলক ভালো লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

এ বিষয়ে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বলা হয়ে থাকে যে, আমাদের দেশে ফান্ডামেন্টালের কোনো বেজ নেই। কিন্তু বেশকিছু কোম্পানি রয়েছে, যারা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের অনেক ভালো রিটার্ন দিয়েছে। বিদেশীরা কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগে আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও ভবিষ্যত্ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে।

আমাদের দেশে যেসব কোম্পানির এসব সূচক ইতিবাচক রয়েছে, সেসব কোম্পানি হিস্টোরিক্যালি ভালো মুনাফা দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে মূলধনি মুনাফা এসব কোম্পানি থেকেই বিনিয়োগকারীরা বেশি পেয়েছেন। বিদেশী বিনিয়োগও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে এসব কোম্পানির শেয়ারে।

শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে বিভিন্ন মানদন্ডের ভিত্তিতে শীর্ষ ২০টি কোম্পানি নির্বাচন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সময় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত।