শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতো রাষ্ট্রায়ত্ত ৪ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে বিদ্যমান সক্ষমতার মধ্য থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার আহবান জানিয়েছেন। ব্যাংকগুলো হলো: সোনালি ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক।

রাষ্ট্রায়ত্ত এ চার ব্যাংক এখনো কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠন করে নি। ফলে প্রচলিত সুযোগের পাশাপাশি বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয় ১৮ এপ্রিলের ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অবস্থান সর্ম্পক্যে যত দ্রুত সম্ভব জানানোর জন্য বলা হয়েছে। বুধবার (২০ এপ্রিল) বিএসইসির উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ওয়ারিসুল হাসান রিফাত সাক্ষরিত এই চিঠি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আমাদের পুঁজিবাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা নিয়ন্ত্রন করে। যাদের এই বাজারে অংশগ্রহন প্রায় ৮০ শতাংশ। কিন্তু পুঁজিবাজারের উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ভূমিকা বেশি হওয়া উচিত।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। যা বিনিয়োগ সীমার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হবে না। এছাড়া ব্যাংকিং কোম্পানিজ আইনে প্রতিটি ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এই মূলধনের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, স্ট্যাচুরি রিজার্ভ ও রিটেইন আর্নিংস অন্তর্ভূক্ত। এই পরিস্থিতিতে সরকারি ৪ ব্যাংককে নতুন অর্থ বিনিয়োগের জন্য চিঠি দিল বিএসইসি।

এর আগে গত ২৩ মার্চ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ৬১টি ব্যাংককে বিদ্যমান সক্ষমতার মধ্য থেকে বিনিয়োগ করার জন্য চিঠি দেয় বিএসইসি। ওই চিঠিতে বিএসইসি বলে, অনেক ব্যাংক বিনিয়োগ সীমা ও ২০০ কোটির বিশেষ তহবিলের থেকে অনেক কম বিনিয়োগ করেছে।

এছাড়া অধিকাংশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ২০০ কোটির বিশেষ তহবিল গঠনই করেনি। এই পরিস্থিতিতে ৩৩ ব্যাংককে বিনিয়োগ সীমা অনুযায়ি ও বিশেষ তহবিল থেকে বিনিয়োগের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশেষ তহবিল গঠন না করা ২৮ ব্যাংককে গঠন করে বিনিয়োগের জন্য বলা হয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ অনুসারে, এককভাবে একটি ব্যাংক তার ইকুইটির ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার নিচে রয়েছে। ফলে বিদ্যমান আইনী সীমার মধ্যেই এ ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক তারল্য সংকটের সময় তাই এ ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি। এজন্য তাদের কাছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে চায় কমিশন। এজন্য তাদের কাছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। দেশের সব ব্যাংককেই প্রচলিত আইনী সীমা ও বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।