দুই শতাংশ সার্কিট ব্রেকার প্রত্যাহার স্রেফ গুজব: শিবলী রুবাইয়াত
শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারদর কমার ২ শতাংশ সর্বোচ্চ সীমা বা সার্কিট ব্রেকার প্রত্যাহারের গুজব ছড়িয়ে কম দামে বিনিয়োগের চেষ্টা করছে একটি চক্র। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কোন চিন্তা-ভাবনা করছে না কমিশন। তাই ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার প্রত্যাহারের গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএসইসি।
গত ৮ মার্চ পুঁজিবাজারে চলমান নেতিবাচক পরিস্থিতিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বেঁধে দেয় বিএসইসি। এতে করে একটি কোম্পানির শেয়ারদর আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইসের উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারে। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার প্রত্যাহার করে ১০ শতাংশ আরোপ করা হবে বলে বাজারে গুজব ছড়িয়েছে। এর আগেও এক দফায় এমন গুজব ছড়িয়েছিল মহলটি। যার কোন ভিত্তি ছিল না এবং এখনো নেই।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছন, স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরী করে বিক্রি চাঁপ বাড়াতে চায়। যাতে করে শেয়ারদর কমে যাবে এবং কম দরে তারা শেয়ার হাতিয়ে নিতে পারবে।
এই বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে দর কমার ২ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার তুলে নেওয়ার কোন চিন্তা-ভাবনা কমিশনের নেই। তাই ২ শতাংশ সার্কিট প্রত্যাহার নিয়ে সৃষ্ট গুজবে বিনিয়োগকারীদের কান না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১ সালে পতনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ সীমা বেঁধে দিয়েছিল কমিশন। ওই বছরে ১ম ও ২য় দফায় ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া কোম্পানিগুলোর উপর এই সীমা আরোপ করা হয়েছিল।
তারও আগে ২০২০ সালে দেশে যখন মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়, তখন শেয়ারবাজারে ভয়াবহ ধস নামে। শেয়ারবাজারে পতন ঠেকাতে ওই বছরের ১৯ মার্চ তৎকালীন খায়রুল হোসেন কমিশন প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বেঁধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়।
এরপরে ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ১ম দফায় ৬৬টি ও ৩ জুন ২য় দফায় ফ্লোর প্রাইসে থাকা বাকি ৩০ কোম্পানি থেকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নেয় কমিশন। ওইসময় ফ্লোর তুলে নেওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ার এক দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে বলে জানায় কমিশন। তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আগের মতোই ১০ শতাংশ সীমা বহাল রাখে। এরপরে ১৭ জুন সব সিকিউরিটিজের উপর স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার আরোপ করে।
উল্লেখ্য, দর পতনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ এর নতুন নির্দেশনার আগে ২০০ টাকার মধ্যে থাকা সিকিউরিটিজের উত্থান-পতনের সীমা (সার্কিট ব্রেকার) ১০ শতাংশ ছিল। অর্থাৎ যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বা ইউনিটের দাম ২০০ টাকার মধ্যে, সেসব শেয়ার বা ইউনিটের দাম একদিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে।
সার্কিট ব্রেকারের অন্য নিয়মগুলো ২০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে থাকা সিকিউরিটিজের সার্কিট ব্রেকার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ৫০০ থেকে ১০০০ টাকার সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৭ দশমিক ৭০ শতাংশ, ১০০০ থেকে ২০০০ টাকার সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, ২০০০ থেকে ৫০০০ হাজার টাকার সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৫ শতাংশ ও ৫০০০ টাকার ওপরে সিকিউরিটিজের ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।