শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে প্রতিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করার যে নীতিমালা রয়েছে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ( বিএসইসি)। বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতিতে তারল্য বৃদ্ধির লক্ষে বুধবার ব্যাংকের অর্থ কর্মকর্তাদের (সিএফও) সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এতে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম অংশগ্রহণ করেন।

বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনিয়োগ সীমার নিচে থাকা ব্যাংকগুলোর দ্রুত বিনিয়োগে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৩৩টি ব্যাংকের অংশগ্রহন করা প্রতিনিধিরা একমত হয়েছেন। এ সভায় পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে তিনটি বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।

প্রথমত ক্যাপিটাল মার্কেটে ব্যাংকের বিনিয়োযেগর সর্বোচ্চ যে সীম ২৫ শতাংশ। ২৫ শতাংশ এর নিচে যাদের বিনিয়োগ রয়েছে তারা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ২ শতাংশ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করবে। দ্বিতীয়ত ক্যাপিটাল মার্কেটের বাইরে যে ২০০ কোটির তহবিল আছে যেসব ব্যাক তহবিল গঠন করেনি তারা দ্রুত গঠন করবে।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম এক অডিও বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অডিওবার্তায় তিনি জানান, আজকের এ বৈঠকে পুঁজিবাজারের তারল্য সঙ্কট কাটাতে তিনটি বিষয়ে ব্যাংকগুলোর পক্ষে সিএফও’রা বিএসইসির সাথে একমত পোষন করেছেন।

সেগুলো হলো: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ হারে বিনিয়োগের যে সীমা রয়েছে এবং সে অনুযায়ী যেসব এখনো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে নাই তারা কয়েকদিনের মধ্যে পুঁজিবাজারে ২ শতাংশ হারে বিনিয়োগ বাড়াবে।

দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য যারা ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ তহবিল গঠন করেছে এবং করে নাই, তারা প্রত্যেকে বিনিয়োগ তহবিল গঠন ও তারল্য সঙ্কট নিরসনে সর্বোচ্চ সামর্থ অনুযায়ী শিগগিরই বিনিয়োগে আসবে।

এছাড়া, টায়ার-১ এর অধীনে অতিরিক্ত মূলধন ও টায়ার-২ মূলধন হিসেবে যেসব ব্যাংক পারপেচ্যুয়াল বন্ড অথবা সাব অর্ডিন্যান্ড বন্ডের আবেদন করবে বিএসইসি সুপার ফার্স্ট ট্র্যাকের আওতায় তা অনুমোদন দিবে। এছাড়া যেসব বিষয় ব্যাংকের মূলধন উত্তোলনের সাথে জড়িত, সেসব বিষয়ও বিএসইসি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে।

বিএসইসিন নির্বাহী পরিচালক জানান, এ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হলে বাজারে তারল্য সঙ্কট নিরসন হবে। এছাড়া পারপেচ্যুয়াল বন্ড অথবা সাব অর্ডিন্যান্ড বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো অর্থ সংগ্রহ করলে ওই মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। যার ফলে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়বে। যা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মুলত ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে পুঁজিবাজারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নীতিমালা আংশিক শিথিল করেছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে প্রতিটি ব্যাংক প্রচলিত নীতিমালার বাইরে গিয়ে পুঁজিবাজারে আরও অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগ করার সুযোগ লাভ করে। এই অতিরিক্ত বিনিয়োগ আগামী ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রচলিত নীতিমালার আওতায় আসবে না।কিন্তু গত দুই বছরেও এই নীতিমালা মেনে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেনি।