শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: ওভার দ্যা কাউন্টার মার্কেট (ওটিসি) থেকে মূল মার্কেটে ফেরা চার কোম্পানির শেয়ার কারসাজি (স্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির) খতিয়ে দেখতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে কারসাজি হয়েছে কি না তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কোম্পানি চারটি হলো: তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, মুন্নু ফেব্রিক্স, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ও পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড।

মুলত দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে দীর্ঘদিন ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে পড়ে থাকা চার কোম্পানি মূল বাজারে ফিরেই দাপট দেখিয়ে চলছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বেড়ে হয়েছে কয়েক গুণ। বিষয়টি নজরে এসেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার। যার ফলে এই চার কোম্পানির শেয়ার দর কেন এত বেশি বেড়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখে বিএসইসিকে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে ডিএসইকে চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আগামী ১৫ কাযদিবসের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলা হয়েছে। এর আগে গত ১৩ জুন মূল বাজারে ফিরে এই চার কোম্পানি। কোম্পানিগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাজারে ফেরার পর থেকে শেয়ার দর বেড়ে হয়েছে কয়েকগুণ।

পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ার ওটিসি থেকে আসার পর শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৭ টাকা ৬০ পয়সায়। তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২৩৫ টাকা ৩০ পয়সায়। অর্থাৎ তিন মানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২১৭ টাকা ৭০ পয়সা বা ১২ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১৫ টাকা ৯০ পয়সায়।

সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি ১১ শতাংশ ক্যাশ এবং ১১ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৩৬৮.০১ পয়েন্টে। সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসে শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ৪৪ পয়সা। আগের বছর আয় ছিলো ৩ টাকা ৫৩ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৪৪ পয়সায়।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল ওটিসি থেকে আসার পর শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ১৮৫ টাকা ৭০ পয়সায়। অর্থাৎ তিন মানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৭২ টাকা ৫০ পয়সা বা ১৩ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৯ টাকায়।

সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। সর্বশেষ কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৩৮.০৬ পয়েন্টে। সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসে শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ৯৮ পয়সা। আগের বছর আয় ছিলো ৮১ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮১ টাকা ৫১ পয়সা।

বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং ওটিসি থেকে আসার পর শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ৫৫ টাকায়। তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২৩৪ টাকায়। অর্থাৎ তিন মানে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৭৯ টাকা বা ৩.২৫ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২৩ টাকা ৯০ পয়সায়।

সর্বশেষ ২০২০ সালে কোম্পানিটি ৯ শতাংশ ক্যাশ এবং ৮ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৫৯৯.৭৩ পয়েন্টে। সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসে শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ২৮ পয়সা। আগের বছর আয় ছিলো ৫ টাকা ৬ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪১ টাকা ৮ পয়সা।

মুন্নু ফেব্রিকস ওটিসি থেকে আসার পর শেয়ার লেনদেন শুরু হয়েছে ১১ টাকায়। তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকায়। অর্থাৎ তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২২ টাকা বা ২ গুণ। সর্বশেষ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকা ৯০ পয়সায়। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও অবস্থান করছে ৫৬০.৬৩ পয়েন্টে। সর্বশেষ তিন প্রান্তিকে (জুলাই’২০-মার্চ’২১) নয় মাসে শেয়ার প্রতি আয় দেখিয়েছে ৪ পয়সা। আগের বছর আয় ছিলো ৬ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ টাকা ৩৪ পয়সা।