শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, মুজিব আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এ সময় সোনার বাংলা বিনির্মাণে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সবাইকে নির্মোহ নির্লোভ ও দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে, কারো হুংকার বা হুমকিতে পিছপা হবো না।’ অধ্যাপক রুবাইয়াত আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকব তাই আমাদেরকে হিংসা বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সবাইকে এক থাকতে হবে, দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে একসাথে কাজ করতে হবে।’

পুঁজিবাজারের অতীত ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় অর্থাৎ ১৯৭১ সালে দেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা থাইল্যান্ড ও কোরিয়ার সমান ছিল এখন তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে তবে আমরা শিগগিরই তাদেরকে ধরে ফেলব।’

“দেশের অর্থনীতির অর্জনকে প্রচার করার জন্যই আমরা ‘ইউ এস ট্রেড শো, রোড শো ইত্যাদি’ করছি। আমাদেরকে আমাদের অর্জনগুলো প্রচার করতে হবে যাতে সবাই বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। দেশে বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে তারা পুঁজিবাজারে আসবে এতে পুঁজিবাজারের লাভ হবে।তাই সবাইকে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।”

পৃথিবীর জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ উপমহাদেশের থেকে অর্জিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “ ‘এই মাটি সোনার মাটি’ এখানে প্রাকৃতিক এবং খনিজ সম্পদে ভরপুর। এখানে সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো মানবসম্পদ।” পুঁজিবাজারের বর্তমান উন্নতি কারও একক অবদান নয় বরং সকলের সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসইসি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিশেষ অতিথীর বক্তব্যে বিএসইসি’র কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ভিশন ও মিশন এবং তার আদর্শ আমাদের পাথেয় হয়ে থাকবে।বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা বিনির্মাণে তার সবটুকু দিয়ে গেছেন। আমরা পথ হারাব না বরং শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সাফল্য দিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিশোধ নেব।’

প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতো এমন নেতা অনেক দিন পর পর আসে। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন পরোপকারী এবং প্রতিবাদী।তাই তিনি মানুষের অধিকার আদায়ে বার বার কারাবরণ করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর শক্তি ছিল মানুষের ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর দুর্বলতাও ছিল মানুষের ভালোবাস’ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু যখন দেশে এসেছিলেন তখন এসে দেখেন ৪৩ হাজার ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

৩ কোটি মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে আর এক কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সরকারের ৭ কোটি মানুষ ছিল কিন্তু ছিলনা কোন ব্যাংক রিজার্ভ, ছিলনা অর্থনীতির ভিত্তি তবুও তিনি নিজ যোগ্যতায় দেশকে গড়ে তুলেছেন ”

সভায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মোহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত। এতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে নিহতদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এবং দেশবাসীর জন্য দোয়া করা হয়।