শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের কোম্পানি লোকসানী জিকিউ বলপেন নিয়ে এখলাস ও মিলনের কারসাজি চলছে। লোকসানী কোম্পানিটি লেনদেনের শুরুতেই বিক্রেতা শুন্য হয়ে যায়। কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রান্তিকে লোকসান হলেও পুঁজিবাজারে দুই কারসাজি চক্রের সিরিয়াল ট্রেডিংয়ে কারণে অস্বাভাবিকভাবে দর বাড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) এখন পর্যন্ত কারণ দর্শানোর নোটিশ পর্যন্ত দেয়নি।

এ ভাবে শেয়ার দর বাড়লে এ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা সর্বশান্ত হবে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বিষয়টি এখনই দেখা উচিত বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এদিকে বর্তমান পুঁজিবাজারে কারসাজির হাতিয়ার যেন লোকসানী কোম্পানি। করোনায় বিপর্যস্ত শেয়ারবাজারেও লোকসানী কোম্পানিকে ঘিরে চলছে দর বাড়ানোর প্রতিযোগিতা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোম্পানিটির সর্বনিন্ম ফ্লোর প্রাইস ছিল ৬৬.১০ টাকা। গত ৭ জুলাইয়েও কোম্পানিটির দর ছিল ৬৬.১০ টাকা। এর পর থেকেই কোম্পানিটির দর অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকে। প্রতিদিনই দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমায় কোম্পানিটির লেনদেন হয়। সোমবার কোম্পানিটির দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩.৩০ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইকোনা কলম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসাও সম্প্রতি ভাল যাচ্ছে না। প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল মাইনাস ৪৮ পয়সা ও মাইনাস ২১ পয়সা। জুলাই মাস শেষ হলেও কোম্পানিটির ডিসেম্বর-মার্চ অর্থাৎ তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু লোকসানের পর এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী দ্রুত মুনাফার জন্য শেয়ারটি নিয়ে কারসাজি করছে।

এখলাস ও মিলনের দুই বিনিয়োগকারীই জিকিউয়ের দর বৃদ্ধির কারিগর। তাদের যৌথ প্রয়াসেই কোম্পানিটির শেয়ার হঠাৎ করেই আলাদিনের চেরাগের মতো দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই দর বাড়তে থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ছুটছেন এই মরীচিকার পিছনে। দরবৃদ্ধি দেখে এক লাখের বেশি ক্রয়াদেশ জমা পড়েছে কোম্পানিটির ক্রেতার ঘরে। কিন্তু কাঙ্খিত শেয়ার পাচ্ছেন না।

সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বলেন, করোনাতে সিন্ডিকেট লেনদেন থেমে নেই। এক শ্রেণির চতুর বিনিয়োগকারী সহজে মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য স্বল্পমূলধনী কোম্পানিকে টার্গেট করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা সফলও হয়েছে। যেমন ইন্স্যুরেন্স খাতের কোম্পানি প্যারামাউন্টে সফল হয়েছেন এক শ্রেণীর লোকজন। এবার অন্যদের কারিশমায় আলো ছড়াচ্ছে জিকিউ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শীর্ষ এক ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সিন্ডিকেটের প্রভাব আগেও ছিল। কিন্তু আগে মৌলভিত্তি কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বেশি ছিল। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে, উল্টোটা ঘটছে। লোকসানী কোম্পানিই যেন এখন আলাদিনের চেরাগ হয়ে উঠেছে। যেন একবার শেয়ার কিনতে পারলেই মিলছে পয়সা।