engineeiring-sectorশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের অধিকাংশ কোম্পানির আয় গত প্রান্তিকে বেড়েছে। এ খাতে তালিকাভুক্ত ৩৩ কোম্পানির মধ্যে ৩২টিই জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, এর মধ্যে আয় বেড়েছে ১৮টির এবং কমেছে ১৩টির। এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের লোকসান আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে সামান্য কমেছে।

প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে লোকসানে থাকা তিন কোম্পানি চলতি বছরের একই সময়ে মুনাফায় ফিরে এসেছে। কোম্পানি তিনটি হলো— দেশবন্ধু পলিমার, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম ও আজিজ পাইপস।

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশবন্ধু পলিমারের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ২৮ পয়সা। গেল প্রান্তিকে লোকসান কাটিয়ে ১৬ পয়সা শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) করে কোম্পানিটি। বিডি থাইয়ের শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৫৬ পয়সা। চলতি প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪৬ পয়সা। এছাড়া প্রথম প্রান্তিকে আজিজ পাইপসের ইপিএস হয়েছে ১৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে লোকসানে ছিল।

প্রথম প্রান্তিকে আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুন্নু জুট স্ট্যাফলার্সের। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এ কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে ১০৪ শতাংশ। এ সময়ে তাদের ইপিএস ১২ পয়সা থেকে ২৫ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে আয় প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বুক বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড। এ কোম্পানির ইপিএস প্রথম প্রান্তিকে ৮৫ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৪ পয়সা।

এ প্রসঙ্গে বিবিএস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ মহসিন বলেন, প্রথম প্রান্তিকে সহযোগী কোম্পানি বিবিএস কেবলসের আয় যুক্ত হওয়ায় কোম্পানির মুনাফা প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এছাড়া করপোরেট সেক্টরে তাদের মূল পণ্য প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্টিল বিল্ডিং স্ট্রাকচারের চাহিদাও বাড়ছে। বর্তমানে গুলশানে নাসা গ্রুপের ১৫ তলা একটি ভবনের কাজ করছে বিবিএস।

২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় গেল প্রান্তিকে ইপিএস ২৯ শতাংশ বেড়েছে ইস্পাত শিল্পের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি বিএসআরএম স্টিলসের। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ১ টাকা ৭১ পয়সা, যা চলতি প্রথম প্রান্তিকে ২ টাকা ২১ পয়সায় উন্নীত হয়েছে। অবশ্য একই গ্রুপের কোম্পানি বিএসআরএম লিমিটেডের ইপিএস একই সময়ের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।

চলতি প্রথম প্রান্তিকে বিএসআরএম লিমিটেডের ইসিএস দাঁড়িয়েছে ৭৪ পয়সায়, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭৮ পয়সা। এছাড়া ইপিএস বেড়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি, কাশেম ড্রাইসেল, নাভানা সিএনজি, আফতাব অটোজ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বিডি ল্যাম্পস, আরএসআরএম, কেডিএস ও অলিম্পিক অ্যাকসেসরিসের।

বিপরীতে ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে ৪৫ পয়সা ইপিএস দেখানোর পর চলতি প্রথম প্রান্তিকে লোকসানে চলে এসেছে গোল্ডেন সান। রফতানিতে সুবিধা করতে না পারায় পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিক মুনাফায় থাকা গোল্ডেন সান চলতি বছর লোকসানে পড়েছে।

প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির নিট লোকসান হয়েছে ২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। যদিও আগের বছরের প্রথম প্রান্তিকে গোল্ডেন সানের নিট মুনাফা ছিল ৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এতে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৩ পয়সা।

একইভাবে বিডি অটোকারসও লোকসানের মুখে পড়েছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ কোম্পানির ইপিএস ছিল ২৮ পয়সা। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে তারা শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১৩ পয়সা।

এদিকে আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে ইস্টার্ন কেবলস, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল ও রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের। ইস্টার্ন কেবলের ইপিএস চলতি প্রথম প্রান্তিকে মাত্র ২ পয়সায় নেমে এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৬ পয়সা। রাষ্ট্রায়ত্ত আরেক কোম্পানি ন্যাশনাল টিউবসের লোকসান চলতি প্রথম প্রান্তিকে আরো বেড়েছে।

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৭১ পয়সা, যা চলতি প্রথম প্রান্তিকে ১ টাকা ৪৩ পয়সায় ঠেকেছে। এদিকে একই সময়ের ব্যবধানে লোকসান কিছুটা কমেছে এটলাস বাংলাদেশের। এর বাইরে ইপিএস কমেছে ন্যাশনাল পলিমার, জিপিএইচ ইস্পাত, ইফাদ অটোজ, বেঙ্গল উইন্ডসর ও অ্যাপোলো ইস্পাতের।