united financeশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, রংপুর ব্যুরো: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড ফাইন্যান্স লিমিটেডের রংপুর শাখার বিরুদ্ধে গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাংকের টাকা জমার রশিদ জালিয়াতি করে এ টাকা আত্মসাৎ করেন।  গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের এক কর্মকর্তা ওয়ান ব্যাংকে খোলা একাউন্টে তা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

জালিয়াতির পরও ওই কর্মকর্তাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় গ্রাহকদের মাছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে, রশিদ জালিয়াতি করার বিষয়টি স্বীকার করলেও এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি ওয়ান ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

গ্রাহকদের অভিযোগে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাসে রংপুরের প্রেসক্লাব এলাকার ইউনাইটেড ফাইন্যান্সে স্বপন কুমার সরকার, রেবা সরকার ও সুপ্ত জ্যোতি সরকার নামে সঞ্চয়ী হিসাব খোলে।

Rangpur-Bankপ্রতিমাসে প্রতিষ্ঠানটির ওয়ান ব্যাংকের একাউন্টে টাকা জমা দেয়ার কথা থাকলেও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে টাকা জমা দিতে না পারায় সুপ্ত জ্যোতি সরকারসহ অন্যদের টাকা ওয়ান ব্যাংকে জমা দেয়ার দায়িত্ব নেন ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের কর্মকর্তা অমিতাভ ঘোষ।

নির্দিষ্ট সময়ে ওই গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ওয়ান ব্যাংকের নির্ধারিত জমা বইয়ে স্বাক্ষর ও সিল নকল করে টাকা জমা না দিয়েই তা আত্মসাৎ করেন অমিতাভ। সঞ্চয়ী হিসেবের খোঁজ নিতে চলতি মাসে প্রতিষ্ঠাটিতে যান গ্রাহকরা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়- কোনো টাকাই জমা হয়নি তাদের হিসেবে।

ইউনাটেড ফাইন্যান্স থেকে জানানো হয়, এরই মধ্যে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। তবে অমিতাভের চাকরি ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি গ্রাহকদের অবগত করার কথা থাকলেও ইউনাটেড ফাইন্যান্স খেকে তা করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন গ্রাহকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নভেম্বরে হিসাব খোলা হলেও পরবর্তী সময়ে কোনো টাকাই জমা হয়নি গ্রাহকদের। ওই তিন গ্রাহকের প্রায় লক্ষাধিক টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে লোপাট করা হয়েছে

এ বিষয়ে ইউনাটেড ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপক ইলিয়াছ জাবেদের কাছে জানতে চাইলে অমিতাভকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে প্রথমে জানালেও পরে তা অস্বীকার করে জানান, অমিতাভ স্ব-ইচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।

অমিতাভের চাকরি বরখাস্ত বা ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি গ্রাহকদের জানানো হয়নি কেন? এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। গ্রাহকদের টাকা জমা হয়েছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি ওয়ান ব্যাংকে খোঁজ নিতে বলেন।

পরে জমার স্লিপ নিয়ে ওয়ান ব্যাংকে গেলে তা দেখে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, ওয়ান ব্যাংকের জমার বইয়ে সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

ভুক্তভোগী সুপ্ত জ্যোতি সরকার জানান, বড় ধরনের ব্যাংক জালিয়াতি রোধে অমিতাভসহ ওই চক্রটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আরো গ্রাহকের টাকা লুট করা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।