শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্বল্প মূলধনী কোম্পানি বিডি অটোকারস টানা দরপতনের নেপেথ্য কি এ প্রশ্ন খোদ বিনিয়োগকারীর মুখে মুখে। অব্যাহত পতনে থাকা স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিনিয়োগকারীরা। স্পট মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে ফেরার পরও কোম্পানি  অস্বাভাবিক দরপতনে রয়েছে।চার মাসেরও কম সময়ে কোম্পানি বিডি অটোকারসের দর হারিয়েছে ৪৮ শতাংশের বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, অস্বাভাবিক শেয়ার দরে লাগাম টানতে গত বছর ১৯ আগস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানি লেনদেন স্থগিত করে দেয়। এরপর ৩ অক্টোবর কোম্পানি দুটিকে বাধ্যতামূলক স্পট মার্কেটে প্রেরণ করে। প্রায় ৪ মাস স্পট মার্কেটে নেতিবাচক প্রবণতায় লেনদেনের পর চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি কোম্পানি মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনা হয়। মূল মার্কেটে ফিরে আসার পরও কোম্পানির শেয়ার দর অব্যাহত পতনে রয়েছে। কোম্পানি শেয়ার দর কোথায় গিয়ে থামবে-তা নিয়ে চিন্তিত বিনিয়োগকারীরা।

কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগকারীরা বলছেন, একটি বিশেষ চক্র প্রতিদিন কোম্পানি দুটির সেল প্রেসার উপর্যপুরি দিয়ে যাচ্ছে। উপর্যপুরি সেল প্রেসারের কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে পেনিক সৃষ্টি হচ্ছে এবং শেয়ার দরে ক্রমাগত পতন হচ্ছে। তারা বলছেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর যখন অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল এবং দায়ীদের শাস্তিও দিয়েছিল। এখন কোম্পানি দুটির অস্বাভাবিক দরপতন হচ্ছে। এই অস্বাভাবিক দরপতনের কারণ খতিয়ে দেখতেও তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভালো লভ্যাংশ ও ভালো মুনাফার খবরে ৪৩ লাখ ২৬ হাজার শেয়ারের কোম্পানি বিডি অটোকারসের শেয়ার দর লাগামহীন হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এর শেয়ারদর ৪৬০ টাকার উপরে উঠে যায়। শেয়ার দরে লাগাম টানতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ১৯ আগস্ট কোম্পানিটির লেনদেন স্থগিত করে দেয়। এরপর ৩ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ার বাধ্যতামূলক স্পট মার্কেটে প্রেরণ করে। সে সময় এর শেয়ারদর ছিল ৪৩৬ টাকা।

প্রায় ৫ মাস নেতিবাচক প্রবণতায় স্পট মার্কেটে লেনদেন করার পর গত ২৩ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে মূল মার্কেটে ফিরিয়ে আনে। তখন শেয়ার দর দাঁড়ায় ৩২২ টাকা। মূল মার্কেটে ফেরার পরও কোম্পানিটির শেয়ার দর ক্রমাগত পতনে থাকে এবং গত বৃহস্পতিবার এর দর নেমে আসে ২২৬ টাকায়। অর্থাৎ স্পট মার্কেটে যাওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪৩৬ টাকা থেকে কমে দাঁড়ায় ২২৬ টাকায়। এ সময়ে দর কমে যায় ২১০ টাকা বা ৪৮.১৬ শতাংশ।

আমজাদ হোসেন নামে এক প্রবীণ বিনিয়োগকারী বলেন, সাম্প্রতিককালে স্বল্প মূলধনী কোম্পানির শেয়ার দরে ঝড় বইছে। সেই কারণে কোম্পানির শেয়ার দরেও পতন চলছে। তবে কোম্পানি দুটির শেয়ার দর অর্ধেকে নেমে আসাটা কোনভাবেই স্বাভাবিক নয়। যেহেতু বছরশেষে কোম্পানি মুনাফা ও লভ্যাংশ বাড়ছে এবং স্বল্প মূলধনী কোম্পানির তকমা রয়েছে, সেহেতু কোম্পানি দুটির শেয়ার দর ঊর্ধ্বমুখী হতে সময় লাগবে না।

উল্লেখ্য, গতবছর ২০১৮ সালে বিডি অটোকারস বিনিয়োগকারীদের ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর মধ্যে ৩ শতাংশ ক্যাশ ও ১২ শতাংশ বোনাস। আগের বছর কোম্পানিটি ৩ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। অন্যদিকে, বিডি অটোকারস বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর মধ্যে ৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ বোনাস। আগের বছর কোম্পানিটি ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। চলতি হিসাব বছরে  কোম্পানি মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে।