আরিফুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের উর্ধ্বমুখী প্রবনতা হলেও আতঙ্ক কাটিেন বিনিয়োগকারীদের। কারন গত চার কার্যদিবস যে হারে সূচকের পতন হয়েছে তাতে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা নতুন করে লোকসানের পড়েছেন। তাছাড়া কয়েক কার্যদিবস বাজারের পরিস্থিতি না দেখে নতুন করে বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। তবে শিগরিই বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীলতার দিকে যাবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, সুচকের একটানা পতন যেমন কারো কাম্য নয়, তেমনি টানা দরপতন বাজারের সুস্থ লক্ষন নয়। বাজারকে তার স্বাভাবিক গতিতে চলতে দিতে হবে। তাহলে বাজার দ্রুত টেসসই এবং স্থিতিশীল হবে।

এছাড়া গত রোববার মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির এমন ঘোষনার পর সূচকের দরপতন ত্বরান্বিত হয়। মুহুর্তের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ‘ভীতি সঞ্জার করে’ এমন মন্তব্যের কারণে দরপতন হয়েছে বলে তাকে দায়ী করেছেন অনেকে। অন্যদিকে, ভীত না হয়ে বিনিয়োগকারীদের ‘ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার’ আহ্বান জানিয়েছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও, দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষ করা কোম্পানিগুলোর শেয়ার প্রতি আয়ের (ইপিএস) ঘোষণা আসতেছে। আর এসব প্রতিবেদনে যেসব কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে সেগুলোর প্রতি ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। যার ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। আর এ ধারা পরবর্তীতেও বিদ্যমান থাকবে পাশাপাশি যা একটি গতিশীল পুঁজিবাজার গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলেও ধারণা করছেন তারা।

মূদ্রানীতি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারী সম্পর্কে ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের বিনিয়োগ নজরদারি করা প্রতিদিনের কাজ। বিষয়টি নতুন করে ফলাও করে বলার যুক্তি নেই। আর নতুন মুদ্রানীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য নেতিবাচক কিছু নেই। এই মুদ্রানীতি বিনিয়োগবান্ধব। তাই মুদ্রানীতি নিয়ে যে কোনো ধরনের উদ্বেগ অযৌক্তিক ও অর্থহীন। মুদ্রানীতি আতঙ্কে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি থাকলেও তা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন তিনি। তাই শিগগিরই বাজারে আবারও গতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, মুদ্রানীতি অর্থবাজারকে প্রভাবিত করে, পুঁজিবাজারকে নয়। তাই মুদ্রানীতির ঘোষণায় এমন বক্তব্য প্রাসঙ্গিক নয়। তবে গভর্নর যা বলছেন তা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর নিয়মিত কাজের অংশ। এটা না বুঝে যারা ভয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বিষয়টি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই ভীতি শিগগিরই কেটে স্থিতিশীলতার দিকে যাবে পুঁজিবাজার।