company-lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১০ কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মাঝে শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। বছর শেষে প্রতিটি কোম্পানির কাছ থেকে ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ আশা করেন বিনিয়োগকারীরা। অথচ তালিকাভুক্ত পর থেকে এসব কোম্পানি নানা ধরনের সমস্যা দেখিয়ে টানা বছরের পর বছর ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করে আসছে বিনিয়োগকারীদের।

টানা লোকসানে ঋণ ও দায়ের পরিমাণ সম্পদের তুলনায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় দেউলিয়ার পথে রয়েছে কিছু কিছু কোম্পানি। এতে বিনিয়োগ হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানিগুলো হলো- আজিজ পাইপস, দুলামিয়া কটন, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা পেট, সমতা লেদার, শ্যামপুর সুগার এবং ঝিলবাংলা সুগার মিলস লিমিটেড, ইমাম বাটন, জুট স্পিনার্স, রহিমা ফুড।

এ কোম্পানিগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষকদের মতামত থেকে জানা যায়, উৎপাদন ক্ষমতা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় ব্যবসা হারাচ্ছে কোম্পানিগুলো। অপরদিকে টানা লোকসানে কোম্পানিগুলোর সমন্বিত লোকসান লাগামহীনভাবে বাড়ছে।

এর পাশাপাশি ঋণ ও দায়ের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে কোম্পানিগুলোর সম্পদমূল্যকেও ছাড়িয়েছে। পরিণতিতে এ কোম্পানিগুলো দায় পরিশোধের ক্ষমতা হারিয়ে বর্তমানে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। আর এ কোম্পানিগুলো মুনাফায় না আসতে পারলে ভবিষ্যতে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আইন অনুযায়ী টানা লোকসান, উৎপাদন বন্ধ, অনিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ইত্যাদি সমস্যা সংকুল কোম্পানিগুলোকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে পাঠানোর ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।

এ ছাড়া যেসব কোম্পানি লোকসানের কারণে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিন ধরে ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না সেসব কোম্পানির পর্ষদে প্রশাসক বা পর্যবেক্ষক বসানোর ক্ষমতাও কমিশনের রয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসর মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান বলেন, কমিশনে জনবলের ঘাটতি থাকায় আর্থিক ও ব্যবস্থাপনায় দুর্বল কোম্পানিগুলোতে প্রশাসক কিংবা পর্যবেক্ষক বসানো যাচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, তবে কোম্পানিগুলোকে ওটিসেতে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এসব দুর্বল কোম্পানির মধ্যে বেশকিছু সরকারি কোম্পানি থাকায় ওটিসিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশকিছু জটিলতা রয়েছে। তবে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় এ বিষয়ে কমিশন কাজ করছে।

আজিজ পাইপস : ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া প্রকৌশল খাতের আজিজ পাইপসের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অথচ এ কোম্পানিটির দায়ের পরিমাণ ৬১ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিশোধিত মুলধনের ১৫ গুণ দায় বহন করছে কোম্পানিটি।

দুলামিয়া কটন : বস্ত্র খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি দুলামিয়া কটনের অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। অথচ কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ৩৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। এ কোম্পানির নিরীক্ষকের মতে, কোম্পানিটি দায় পরিশোধের ক্ষমতা হারাচ্ছে। অর্থাৎ কোম্পানিটি দেউলিয়ার দিকে যাচ্ছে।

আইসিবি ইসলামী ব্যাংক : ব্যাংক খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬৬৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অথচ কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১ হাজার ৬২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা।

এর মোট ৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ২ হাজার ৩০০টি শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৫৯.৭৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৬.৩৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২৩.৮৮ শতাংশ শেয়ার। বর্তমানে এটি একটি লোকসানি কোম্পানি যার অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।

মেঘনা পেট : ২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি মেঘনা পেটের অনুমোদিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১২ কোটি টাকা। কোম্পানিটির পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

অডিটরের মতে, বর্তমানে কোম্পানিটি ১৬ কোটি টাকা সমন্বিত লোকসানে রয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির মোট দায় সম্পদমূল্যের চেয়ে ৬৪ লাখ টাকা বেশি। আর এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই কোম্পানিটি দেউলিয়ায় পরিণত হবে।

সমতা লেদার : চামড়া খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি সমতা লেদারের অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১ কোটি ৩ লাখ ২০ হাজার শেয়ারের মধ্যে পরিচালনা পর্ষদের কাছে রয়েছে ৫০.০০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কছে রয়েছে ১৪.২৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩৫.৭৬ শতাংশ শেয়ার।

শ্যামপুর সুগার : চামড়া খাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি শ্যামপুর সুগার অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকা। অডিটরের মতে, প্রতি বছর কোম্পানিটির দায়, ঋণ ও সুদের পরিমাণ বাড়ছে।  কোম্পানিটির মোট ৫০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সরকারি বিনিয়োগ রয়েছে ৫২.৬০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৭.৪০ শতাংশ শেয়ার।

ঝিলবাংলা : খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ঝিলবাংলার অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি টাকা। এর পুঞ্জিভূত লোকসানের পরিমাণ রয়েছে ১৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ৬০ লাখ শেয়ারের মধ্যে সরকারের কাছে রয়েছে ৫১.৫০ শতাংশ, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কছে রয়েছে ০.৩৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৮.১২ শতাংশ শেয়ার।

ইমাম বাটন: ইমাম বাটনের বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ইমাম বাটন সম্পর্কে বলা হয়, চলমান সংকট কাটাতে না পারলে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটির কার্যক্রম ভবিষ্যতে ধাক্কা খেতে পারে। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে কোম্পানিটি সম্পর্কে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আনিসুর রহমান অ্যান্ড কোম্পানির এ পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে।

ডিএসইতে প্রকাশিত নিরীক্ষকের মতামত অনুযায়ী, কোম্পানিটির উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। চলতি বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত আর্থিক বছরে কোম্পানিটি তাদের উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২১ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে।

উৎপাদন যন্ত্রপাতির কারিগরি সমস্যা, পণ্যের বাজার চাহিদা ও ক্রমাগত বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণেই মূলত বছরজুড়ে এটির উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এ অবস্থায় কোম্পানিটি টেকসই করতে হলে এটির উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবহার করতে হবে। নিরীক্ষকের হিসাবে কোম্পানিটির বর্তমান পরিচালন ক্ষতি বা লোকসানের পরিমাণ প্রায় এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

কোম্পানিটির অবকাঠামোগত ও পরিচালন সমস্যার সমাধান এবং আর্থিক অবস্থা ও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো না হলে ভবিষ্যতে এটির চলমান কার্যক্রম ধাক্কা খেতে বা অনিশ্চয়তায় পড়তে পারে।

নিরীক্ষকের এসব পর্যবেক্ষণের বিষয়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে একাধিকবার ফোনে ও খুদে বার্তায় যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রামভিত্তিক বোতাম উৎপাদনকারী এ কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০১১ সাল থেকে কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দেয়নি। এ কারণে নিয়ম অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটিকে দুর্বল মৌলভিত্তির ‘জেড’ শ্রেণিভুক্ত করেছে।

সাত কোটি ৭০ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৭৭ লাখ। যার মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৩৫ শতাংশ শেয়ার।

জুট স্পিনার্স: জুট স্পিনার্সের কোম্পানির ভবিষ্যত কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে এর নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে পুঞ্জীভূত লোকসান বেড়ে যাওয়ায় এ মতামত দিয়েছে নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোম্পানি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩০ জুন ২০১৬ সমাপ্ত হিসাব বছরে জুট স্পিনার্সের নিট লোকসান হয়েছে ৭ কোটি ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬৯ টাকা।
এর সঙ্গে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ ৪৫ হাজার ২৬৩ টাকা।

এত বড় লোকসান নিয়ে ভবিষ্যতে কোম্পানিটির এগিয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদনে বেশকিছু অনিয়মের কথা উল্লেখ করেছে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান।

নিরীক্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, জুট স্পিনার্স বাংলাদেশ লেবার ল ২০০৬-এর সেকশন ২৩৪ (বি) পরিপালন করেনি। বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোম্পানিটি শ্রমিকদের অংশগ্রহণমূলক মুনাফা তহবিলে (ডবি¬উপিপিএফ) কোনো সুদ প্রদান করেনি। অন্যদিকে পরিচালকদের ২ কোটি ৭৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬ টাকা প্রদান করলেও এ-সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র প্রদান করতে পারেনি।

এর বাইরে কোম্পানির একজন পরিচালককে সুদ বাবদ ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা প্রদান করলেও তার এআইটি (অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স) কাটেনি, যাতে ভবিষ্যতে কোম্পানিটিকে জরিমানা গুনতে হতে পারে।

প্রসঙ্গত, লোকসানের কারণে ২০১৬ হিসাব বছরে কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ করেনি জুট স্পিনার্সের পরিচালনা পর্ষদ। গেল হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪২ টাকা ১০ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ১৯ টাকা ৬৯ পয়সা।

সর্বশেষ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য এজেন্ডা অনুমোদনের জন্য আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করবে তারা।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি ১০ টাকা ১৭ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে জুট স্পিনার্স। যেখানে আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৯ টাকা ৭০ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট দায় ১৫৭ টাকা ৬১ পয়সা।

১৯৮৪ সালে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩ কোটি ৫০ লাখ ও পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুসারে এর পুঞ্জীভূত দায় ১৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জবাবদিহিতার অভাবে কোম্পানিগুলো দীর্ঘ সময় ধরে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। একে ‘দিনেদুপুরে ডাকাতি’ বলেও অভিহিত করেছেন তারা। যে সব কোম্পানি নিয়মিত ডিভিডেন্ড দেয় না এবং যেগুলোর উৎপাদন বন্ধ, সেগুলো ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে।

নিয়মানুযায়ী সমাপ্ত হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে না পারলে ওই কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয়া হয়। শুধু তা-ই নয় ওইসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণ থেকেও বঞ্চিত হয়।

এমন অনেক কোম্পানি রয়েছে যেগুলো আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরের বছর থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। সঠিকভাবে খোঁজখবর না নিয়ে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করার অনুমোদন দেয়ার কারণে এসব দুর্বল কোম্পানির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদাসীনতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেছেন, “কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। এমন কোনো আইনও নেই যেখানে কোনো কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকলে ফাইন হবে। অর্থাৎ কথিত আইনের মাধ্যমে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে দিনেদুপুরে মানুষের টাকাগুলো ডাকাতি করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান নেয় তাদের তদারকির বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনোভাবে দায় এড়াতে পারে না। তা ছাড়া কোম্পানিগুলোকে বাজারে আসার অনুমোদন দেয়ার আগে তাদের ভিত্তি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া বিএসইসির দায়িত্ব। আর এতে ভালো কোম্পানি বাজারে আসবে। ফলে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে।’