aamra networkআমীনুল ইসলাম, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আমরা নেটওর্য়াকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে দেশের শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের জন্য আমরা নেটওয়ার্কসের আবেদনে সুপারিশ করবে না দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। সম্প্রতি এক চিঠির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) বিষয়টি জানিয়েছে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ।

করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন ও সর্বজনীন হিসাব বছর পরিপালনে কোম্পানির ব্যর্থতার কারণেই এ অবস্থান নিয়েছে ডিএসই। পাবলিক ইস্যু রুলসে কোম্পানির আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জের সুপারিশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জ কোনো আইপিওতে সুপারিশ না করলে সেটা বিএসইসির সম্মতি পাবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৫৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা সংগ্রহের জন্য আইপিওর আবেদন করেছে। এ লক্ষ্যে কোম্পানিটি খসড়া প্রসপেক্টাস (রেড হেরিং প্রসপেক্টাস নামে পরিচিত) জমা দেয়। খসড়া প্রসপেক্টাস পর্যালোচনায় বিএসইসির করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইনে পরিচালকদের প্রতিবেদন-সংক্রান্ত দুটি শর্ত পরিপালনে ব্যর্থতা চিহ্নিত করে ডিএসই।

এছাড়া চলতি বছর থেকে সর্বজনীন হিসাব বছর অনুযায়ী আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি বাধ্যতামূলক হলেও কোম্পানিটি তা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থ বিল ২০১৫ অনুযায়ী, ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য সব কোম্পানির জন্য জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত হিসাব বছর বাধ্যতামূলক করা হয়। চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল এক নির্দেশনার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়ায় থাকা কোম্পানির জন্য তা প্রযোজ্য বলে জানায় বিএসইসি।

অবশ্য পরবর্তীতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য এ শর্ত শিথিল করা হয়। আইপিওর আবেদন করা আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেডের হিসাব বছর ছিল জানুয়ারি-ডিসেম্বর। সরকারি সিদ্ধান্তে হিসাব বছর পরিবর্তন হলেও কোম্পানিটি সর্বশেষ জুলাই-জুন হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিষয়টিকে পরিপালনে ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে ডিএসইর এক কর্মকর্তা জানায়, অর্থ বিল ২০১৫ অনুযায়ী বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য যে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। আমরা নেটওর্য়াক আইপিও প্রক্রিয়ার শুরুতে করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইন চাহিদা অনুযায়ী তার শতভাগই পালন করেননি। তাই ডিএসই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের জন্য আমরা নেটওয়ার্কসের আবেদনে সুপারিশ করবো না। এ বিষয়ে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কাছে চিঠিও দিয়েছে আমরা।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১০ জানুয়ারিতে কার্যক্রম শুরু করে আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড। গত পাঁচ বছরে কোম্পানিটির টার্নওভার ও মুনাফা দ্বিগুণ বেড়েছে। খসড়া প্রসপেক্টাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১১ সালে কোম্পানিটির টার্নওভার ছিল ৩৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, যা ২০১৫ সালে এসে ৬৬ কোটি ২৯ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এ সময় মোট মুনাফা ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা থেকে ২৬ কোটি ৪২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

আর কর-পরবর্তী মুনাফা ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা থেকে ১২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ২০১১ সালে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১.৫৩ টাকা, যা ২০১৫ সাল শেষে ৩.১৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালে কোম্পানির নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) ছিল ২৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা ২০১৫ সালে ৯৪ কোটি ৩১ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।