bangladesh bankশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আগামী ২৬ জুলাই চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। এই মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন নতুন গভর্নর ফজলে কবির। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল মঙ্গলবার শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগামী ২৬ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে নতুন এই মুদ্রানীতি প্রণয়নের প্রায় সব কাজ শেষ করে এনেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, সর্বশেষ মুদ্রানীতির মতোই মুদ্রানীতি প্রণয়ন করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই মুদ্রানীতির ধরন হবে ‘প্রবৃদ্ধি সহায়ক ও  বিনিয়োগবান্ধব’। তবে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে মধ্যে রাখার লক্ষ্য থাকবে এতে। সেই সঙ্গে জাতীয় বাজেটের ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে মাথায় রেখেই প্রবৃদ্ধি সহায়ক মুদ্রানীতি প্রণয়ণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত গত মুদ্রানীতিতে জুন পর্যন্ত বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।  অবশ্য নির্ধারিত সময়ের পাঁচমাস আগে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসের শেষে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, জুন শেষে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এ কারণে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সর্বশেষ ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল, তার চেয়ে অন্তত ৩ শতাংশ বেশি ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হবে নতুন মুদ্রানীতিতে।

সর্বশেষ, এ বছরের ১৪ জানুয়ারি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিলেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সেই মুদ্রানীতিতে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। পরে অবশ্য আলোচিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি পদত্যাগ করেন।

এদিকে, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের নিচে ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে, যার মধ্য দিয়ে পূরণ হয়েছে বাজেটের প্রত্যাশা। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৯২ শতাংশে নেমেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতির এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

মুদ্রানীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, এই মুদ্রানীতির মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির সুযোগ থাকবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং কৃষিখাতে ঋণের প্রবাহ বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  নির্বাচিত (সিলেকটিভ)খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং রফতানিমুখী, উৎপাদনশীল ও পরিবেশবান্ধব শিল্পস্থাপনে আগের চেয়ে বেশি অর্থ বা ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বাইরে এরিয়া এপ্রোচ (এলাকাভিত্তিক) ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী উদ্যোক্তা ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদেরকে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি বছর দুইবার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে। সাধারণত, মুদ্রার গতিবিধি প্রক্ষেপণ করে এই মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতির অন্যতম কাজগুলো হলো- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করা, ঋণের প্রক্ষেপণের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি ঋণের যোগান ধার্য করা এবং মুদ্রার প্রচলন নিয়ন্ত্রণ করা।