স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: টানা দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। কোনোভাবেই থামছে না সূচকের পয়েন্ট হারানো ও দরপতন। বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ আর ক্রন্দন। প্রতিদিনই বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। ভিটেবাড়ি ও সম্পদ বিক্রি করে এখানে বিনিয়োগ করে আজ পথে বসেছে। আশার আকাশে প্রতিদিনই নিরাশার কালো মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। লোকসান দিতে হতে বিনিয়োগকারীরা আজ সর্বশান্ত হচ্ছেন। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যস্ত রয়েছেন জরিমানা ইস্যুতে।

একের পর এক কোম্পানিকে কারসাজির অভিযোগে জরিমানা করে বাজারকে অস্থিতিশীল করছেন। ফলে নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছেন না। বিনিয়োগকারীদের অভিমত এটা ২০১০ সালের বাজার পরিস্থিতিকে হার মানিয়েছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা মধুর মধুর কথা বলে লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর পরিবারকে সর্বশান্ত করছেন। এছাড়া দরপতন ঠেকাতে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ফলে টানা দরপতনে পুঁজিবাজারে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদে মতিঝিলের বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। ফলে মোটা দাগে মার্চেন্ট ব্যাংকের ফোর্সড সেল ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের অভাব এবং সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতাকে এবং জরিমানা ইস্যুতে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

একাধিক বিনিয়োগকারীরা অভিযোগের শুরু বলেন, যে ভাবে পুঁজিবাজারে জরিমান চলছে এখানে কেউ সাহস করে বিনিয়োগ করবে না। জরিমানা কারনে বর্তমান বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও মার্কেট মেইকাররা নিরব ভুমিকায় রয়েছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কারসাজি ইস্যুতে জরিমানা রেকর্ড সৃষ্টি করছেন। পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এত বড় জরিমানা আর কখনোই হয়নি। মার্কেট মেইকারদের জরিমানা না করে যে সকল কোম্পানির নো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে তাদের পরিচালকদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা উচিত বলে তারা মনে করেন।

এদিকে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১০৫ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৪০ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৮১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৪ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৫ টির, দর কমেছে ১৯৮ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯১ টির।

ডিএসইতে ৩৫১ কোটি ৫৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩০৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৪ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৯ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১৫ টির এবং ৪০ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।