শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, পুঁজিবাজারকে ঠিক করতে হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আগে ঠিক করতে হবে। বিএসইসি এই দরবেশের মতো লোকদের সুবিধা দিতে অনেক নতুন নতুন রীতিনীতি, বিধান-প্রবিধান বানিয়েছে। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেজন্য আমি মনে করি যে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে আগে শক্তিশালী করা উচিত। গত সোমবার অর্থনীতিবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বর্তমান ‘ব্যবসা এবং অর্থনৈতিক দৃশ্যকল্প এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা প্রতিষ্ঠান চালায় নৈতিকতা বা অনৈতিকতা নিয়ে প্রশ্নটা তাদের উপর আসুক। বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক যদি অন্যায় করে থাকে তবে তার শাস্তি হওয়া উচিত। দোষ মালিক করে, প্রতিষ্ঠান দোষ করে না। তাই মালিককে শাস্তি দেয়া হোক প্রতিষ্ঠানকে নয়।

আব্দুল আউয়াল বলেন, বেক্সিমকোর যে প্রতিষ্ঠানগুলো শুনতে পাচ্ছি বিক্রি করবে, কারা বিক্রি করবে কেন বিক্রি করবে? আমি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে মনে করি কোন উৎপাদনশীল খাতে সরকার এমন কোন কাজ স্টেপ নিবেন না যাতে দেশের উৎপাদন শিল্প ব্যহত হবে, যার ফলে শ্রমিকরা চাকরি হারাবেন। বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক কর্মকর্তারা যদি দোষ করে থাকে তবে আমি চাই তাদের শাস্তি দেয়া হোক। কিন্তু সরকারের এমন কিছু করা উচিত না যার ফলে উৎপাদনমুখী শিল্প ব্যহত হবে।

এ সময় পুঁজিবাজারের নতুন দরবেশ এসেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা আমাদের পুঁজিবাজারকে কখনোই ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি নাই। বিনিয়োগের পরিবর্তে বাজারকে লটারি খেলার যায়গা ভেবে নিয়েছে। এখানে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ না করে, লটারি খেলার মতো আজকে কিনলাম, দাম বেড়ে গেলে কালকেই বড়লোক।

আব্দুল আউয়াল বলেন, যে কোন দেশের অর্থনীতির বর্তমান হাল-চাল বিচার করতে গেলে, প্রথমেই যে সব বিষয় সামনে চলে আসে তা হলো সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন নির্দেশক, বাজার ব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক নীতিমালাসমূহ। সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো ‘সার্বিক চাহিদা’ বা অর্থনৈতিক পরিভাষায় ‘জিডিপি’ অথবা ‘সার্বিক অভ্যন্তরীন উৎপাদন’ বৃদ্ধি করা। অতপর এ লক্ষ্য অর্জনে যথাযথ নীতি প্রণয়ন, প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো।

অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা অর্থনৈতিক উন্নয়ন যাই হোক, সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা থাকা অতীব প্রয়োজন। তবে সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সমস্যা হলো; বিভিন্ন নির্দেশকের সম্পর্ক পরম্পরার মধ্যে যে জটিলতা, প্রথমে সেগুলোকে ধর্তব্যে আনা।

নির্দেশকগুলোর বর্তমান হাল-চাল বিবেচনা করে ভবিষ্যতে সেগুলোতে ইতিবাচক ফলাফল অর্জনের পরিকল্পনা করা। অতপর নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে যাওয়া। একই সময় অন্য কোনো নির্দেশকের অবাঞ্ছিত নেতিবাচক পরিণাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। স্বভাবগতভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির একটি নির্দেশক বাঞ্ছিত পরিবর্তন আনার পথে আরেকটি নির্দেশকে অবাঞ্ছিত পরিবর্তন আসতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার পর্যালোচনায় বোঝা যায় যে একনায়কতন্ত্র, স্বেচ্ছাচারী শাসন, দলীয়করণ, দলীয় লোকদের তোষণ- পোষণকে বিগত সরকার রাষ্ট্রীয় রীতি-নীতিতে পরিণত করে ফেলেছিল।