শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২০ খাতের জুন ক্লোজিং খাতগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তর হলো প্রকৌশল খাত। এ খাতের ৪২টি কোম্পানিটির মধ্যে সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে (’২১ সালের জুলাই থেকে ’২২ সালের মার্চ) ১৫টি কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে। আর ইপিএস কমেছে ১৩টি কোম্পানির। এ ছাড়া আটটি কোম্পানি লোকসানে রয়েছে। পাঁচটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এর একটি কোম্পানি হলো সিঙ্গার বিডি ডিসেম্বর ক্লোজিং প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া বিনিয়োগকারীর পছন্দের তালিকায় রয়েছে জুন ক্লোজিং কোম্পানির কিছু খাতের শেয়ারের। সামনে লভ্যাংশ মৌসুম থাকায়  জুন ক্লোজিং কোম্পানি ঘিরে লেনদেনে মগ্ন রয়েছেন তারা। এরই জেরে বাড়ছে এসব কোম্পানির কদর।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, খাতটিতে ইপিএস বেড়ে যাওয়া ১৫ কোম্পানির মধ্যে কেডিএস অ্যাক্সেসরিজ রোববার সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর আগের বছরগুলোতে কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ করে লভ্যাংশ দিয়েছিল। এ বছর কোম্পানিটি ১ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ বছর কোম্পানিটির মুনাফাও ছিল তালিকাভুক্তির পর সর্বোচ্চ।

সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কেডিএস অ্যাক্সেসরিজের ইপিএস বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির লভ্যাংশ বেড়েছে। এ কারণে ইপিএস বৃদ্ধি পাওয়া অন্য ১৪ কোম্পানিতেও এ বছর বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা কিছুটা বেড়েছে।

অন্যদিকে, ইপিএস কমে যাওয়া ১৩টি কোম্পানির মধ্যে ওয়ালটন হাইটেকও সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আগের বছর ২০২১ সালেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় কোম্পানিটির লভ্যাংশ বাড়েনি। কারণ, সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির মুনাফায় নেতিবাচক প্রবণতা ছিল। তবে ভালো রিজার্ভ থাকায় কোম্পানিটির লভ্যাংশ কমেনি।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে যেসব কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে, সেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেনে এরই মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। মুনাফা ইতিবাচক থাকায় কোম্পানিগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ আগ্রহও তৈরি হয়েছে বলে তারা মনে করেন। অন্যদিকে, মুনাফা কমে যাওয়া কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা কমেছে। সে কারণে এ কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগ শেয়ারই নেতিবাচক অবস্থানে বা ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে।

আনোয়ার গ্যালভানাইজিং : প্রথম তিন প্রান্তিকে বা ৯ মাসে (২১ সালের জুলাই থেকে ২২ সালের মার্চ) ইপিএস হয়েছে ৮ টাকা ৫৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৩ পয়সা। গত বছর ২০২১ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ নগদ এবং ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল।

বিবিএস: প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১০ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

বিডি অটোকার : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩১ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

বিডি ল্যাম্প : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা শূন্য ৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ২৬ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

বিএসআরএম লিমিটেড : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১২ টাকা শূন্য ১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১০ টাকা ৯৩ পয়সা। সর্বশেষ কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

বিএসআরএম স্টিল : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৮ টাকা শূন্য ৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৮৮ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

কপারটেক : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৪৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৭৮ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

দেশবন্ধু পলিমার : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে লোকসানে ছিল ৩৩ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

গোল্ডেন সন : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৪৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৫ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ইফাদ অটো : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ২৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৭ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

কেঅ্যান্ডকিউ : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৬৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬০ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ন্যাশনাল পলিমার : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা শূন্য ৭ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

রংপুর ফাউন্ড্রি : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ১১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩ টাকা শূন্য ৪ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ২৩ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।

ইয়াকিন পলিমার : প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৫৫ পয়সা। গত বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি।