শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে একদিকে চলছে বড় উত্থান, অন্যদিকে বাড়ছে পতনে নামা এবং ফ্লোর প্রাইসে ফেরা কোম্পানির ছড়াছড়ি। আজ সোমবার সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে প্রায় ৬৬ পয়েন্ট। তারপরও আজ যতগুলো কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে তার দেড় গুণ। এ ছাড়া আজও ফ্লোর প্রাইসে ফিরেছে ২১ প্রতিষ্ঠান। আগের দিন রোববারও উত্থানের বাজারে ১৭টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে ফিরেছে।

আজ যে ২১টি প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে, সেগুলো হলো এক্সিম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, সামিট পাওয়ার, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, পিপলস ইন্স্যুরেন্স, পূরবী ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মাইডাস ফাইন্যান্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, লিবরা ইনফিউশন, লুব রেফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আরগন ডেনিম, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনউইক যজেনশ্বর, খুলনা প্রিন্টিং, রানার অটো, জিবিবি পাওয়ার এবং এমবিএলফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং আইবিবিএল-২ বন্ড।

আগের দিন যে ১৭ প্রতিষ্ঠান ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছিল সেগুলো ছিল: ড্রাগন সোয়েটার, আলহাজ টেক্সটাইল, ভিএএমএলআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স, এবি ব্যাংক, ওয়েস্টার্ন মেরিন, পদ্মা অয়েল, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, এসকে ট্রিমস, এনসিসি ব্যাংক, সায়হাম কটন, ডেসকো, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ডমিনেজ স্টিল, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনাটা, স্কয়ার ফার্মা এবং আইবিবিএল বন্ড।

আজ লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮টির। বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫টির। দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১২৮টির। যেগুলোর প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে। এরপরও সূচকে বড় উত্থান রয়েছে। সূচকের এমন অস্বাভাবিক উত্থানে আগের দিনের মতোই লেনদেন ও দর বৃদ্ধিতে শীর্ষে রয়েছে ওরিয়ন গ্রুপের কোম্পানি। সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি দর বাড়ার কারণে ১৬ দশমিক ২৮ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে ওরিয়ন গ্রুপের কোম্পানি বিকন ফার্মা। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ২৩ লাখ টাকার বেশি শেয়ার।

এদিকে, ওরিয়নের লাগামহীন আরেক কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মার ২৪০ কোটি ৫ লাখ টাকার বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সঙ্গে সূচকে যোগ করেছে ৬ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। এ দুই কোম্পানি সূচক বাড়াতে অবদান রেখেছে ২৩ দশমিক ১৫ পয়েন্ট। লেনদেনে শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেড সূচক বাড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। গ্রুপের আরেক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট। এ দুই কোম্পানি মিলে সূচক বাড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৬০ পয়েন্ট।

আজ বেক্সিমকো লিমিটেডের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২৭৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকার বেশি শেয়ার। আর বেক্সিমকো ফার্মার ২১ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেএমআই হসপিটাল, শাপইনপুকুর সিরামিকস, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের লেনদেন হয়েছে ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকার মধ্যে।

আজ ডিএসইর লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ১৭৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। লেনদেনের এমন উত্থানের দিনেও আজ ১৬ প্রতিষ্ঠানের কোনো লেনদেন হয়নি। ১০টির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪টি করে; ১০ থেকে ১০০টির মধ্যে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০টির।

অন্যদিকে, ১০০ থেকে ১ হাজারের মধ্যে শেয়ার লেনদেন হওয়া কোম্পানি ছিল ৮টি। এছাড়া, ৩০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ হাজারের নিচে। অন্যান্য শেয়ারে আগ্রহ কম থাকলেও গুটি কয়েক কোম্পানির শেয়ারের ওপর ভর করে লেনদেন আগের দিনের চেয়ে আজ আরও কিছুটা বেড়েছে।

পুঁজিবাজারের এমন ভারসাম্যহীন লেনদেন ও উত্থান সম্পর্কে বাজার বিশ্লেষকরা বলেন, ইনডেক্স যেভাবে মুভ করছে এবং যেভাবে টার্নওভার গড়াচ্ছে, তাতে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, এটা স্মুথ টার্নওভার নয়। এমন অবস্থায় সতর্ক অবস্থানে থেকে বুঝেশুনে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ মার্কেটটা এখন ‘ফ্লাইং মার্কেট’।