শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে (সিএমএসএফ) অবণ্টিত নগদের চেয়ে বোনাস শেয়ার দিতে অনীহা অনেক বেশি। তবে এসব শেয়ার ও নগদ সংগ্রহে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কঠোর অবস্থানের দিকে যাচ্ছে।

পুঁজিবাজারে অবণ্টিত ৬০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশের মধ্যে সিএমএসএফে ৪৬০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বা ৭৬ শতাংশ জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আট হাজার ১০৭ কোটি ৬ লাখ টাকার বোনাস শেয়ারের মধ্যে মাত্র ৩৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকার বা ৪ শতাংশ জমা দিয়েছে।

বর্তমানে পুঁজিবাজারে ১৭২ কোম্পানিতে ১৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকার নগদ অবণ্টিত লভ্যাংশ পড়ে রয়েছে। এছাড়া ২২৩ কোম্পানিতে ৭৭৬ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ১৭৯ কোটি ৯৭ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩১টি বোনাস শেয়ার রয়েছে। সবচেয়ে বেশি অবণ্টিত বোনাস শেয়ার পড়ে রয়েছে ব্যাংকগুলোর কাছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৩টি (নতুনগুলোসহ) ব্যাংকের মধ্যে ২৭টি থেকেই শেয়ার সিএমএসএফে দেওয়া হয়নি। এই খাতে ১২৮ কোটি ৪৬ লাখ ৬৮ হাজার ২৫৮টি বা ৭১.৫৫% অবণ্ঠিত বোনাস শেয়ার রয়েছে। এরপরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ কোটি ৭৬ লাখ ২৮ হাজার ১৮৫টি বা ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে আর্থিক খাতের ১১ কোম্পানির কাছে। আর পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিংয়ের ২ কোম্পানির কাছে রয়েছে ১০ কোটি ৭১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮২টি বা ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ অবণ্ঠিত বোনাস শেয়ার।

এই অবণ্টিত বোনাস শেয়ার ও নগদ লভ্যাংশ আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কমিশন। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, শুরুতে ২২ হাজার কোটি টাকার অবণ্ঠিত লভ্যাংশের তথ্য পাওয়া গেলেও এখন সেটা ৭০০-৮০০ কোটিতে নেমে এসেছে। এই অল্প সময়ের ব্যবধানে এতো টাকা কোথায় গেলো? এই বিষয়টি অনুসন্ধানে আমরা অডিট শুরু করব। পুঁজিবাজারে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের বিষয়ে অডিট করা হবে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, কোম্পানিগুলো যখনই অবণ্টিত লভ্যাংশ স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে প্রেরণের জন্য সময় চেয়েছে, তখনই দেওয়া হয়েছে। এভাবে বারবার সময় নিচ্ছে। কিন্তু এখনও জমা দেয়নি। কিন্তু অডিট শুরু করার পরে সময় দেওয়া হবে না। এজন্য আগামি ৩১ মে’র মধ্যে সবাইকে অবন্টিত লভ্যাংশ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। অন্যথায় ৩১ মে’র পরে কমিশন যদি কোন পদক্ষেপ নেয়, তখন কাউকে কিছু মনে না করারও অনুরোধ করেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমএসএফের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। এতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি এম আনিস উদ দৌলা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।