শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারের ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ ৮ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। এই নেগেটিভ ইক্যুইটি ১১৬ প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে ২৭ প্রতিষ্ঠানেরই রয়েছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। যা মোট নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রায় ৮৬ শতাংশ। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে এসব প্রতিষ্ঠানে নেগেটিভ ইকুইটি রয়েছে, যা পুঁজিবাজারের স্বাভাবিক লেনদেনের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে।বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

মূলত শেয়ার ক্রয়ে গ্রাহককে দেওয়া ঋণ নির্ধারিত সময়ে ফোর্সড সেল (বাধ্যতামূলক বিক্রি) করতে না পারায় ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে বিপুল পরিমাণের নেগেটিভ ইকুইটির সৃষ্টি হয়। আর এটি ২০১০ সালে পুঁজিবাজার পতনের সময় থেকে তৈরি হয়েছে।

সে সময় বড় পতন হলেও ঋণপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফোর্সড সেল করতে না দেওয়ায় বিপুল পরিমাণের বিনিয়োগ নেগেটিভ ইকুইটিতে পরিণত হয়। অবশ্য সে সময় নেগেটিভ ইকুইটির পরিমাণ আরও বেশি থাকলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কমেছে।

বিএসইসি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৬০টি ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যে ১১৬টি প্রতিষ্ঠানে নেগেটিভ ইকুইটি রয়েছে, যার পরিমাণ ৮ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৫ ব্রোকারেজ হাউজ ও ১২ মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইকুইটির পরিমাণ হচ্ছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা, যা বাজারের মোট ঋণাত্মক মূলধনের ৮৬ শতাংশ। ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯ মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইকুইটির পরিমাণ ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা।

আর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৭৫ ব্রোকারেজ হাউজের ৪ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ১২ ব্রোকারেজ হাউজের ৯৮ কোটি টাকা নেগেটিভ ইকুইটি রয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এসব নেগেটিভ ইকুইটি শূন্যে নামিয়ে আনার নির্দেশনা রয়েছে বিএসইসির।

বিএসইসি সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে ঋণাত্মক ইকুইটির পরিমাণ আরও বেশি ছিল। বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক তাদের মূল কোম্পানির সহযোগিতা নিয়ে মূলধন সমন্বয় করেছে। কয়েকটি মার্চেন্ট ব্যাংক তাদের নেগেটিভ ইকুইটি তথা গ্রাহকদের দেওয়া মন্দ ঋণ অবলোপন করেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন রুলস, ১৯৯৯-এর ৩(৫) ধারা অনুযায়ী, কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে ওই হিসাবে শেয়ার কেনাবেচা বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু ২০১০ সালের ধস-পরবর্তী বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েক দফা ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়।