শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সাত কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এর মধ্যে চারটি কোম্পানির ইপিএস কমলেও তিন কোম্পানির মুনাফা বেড়েছে। কোম্পানিগুলো হলো: ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, লিন্ডে বিডি, ওয়াটা কেমিক্যালস, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড , গ্রামীন ফোন এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।

ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আজ কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৯ পয়সা।

গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ০৭ পয়সা। এদিকে গত ৯ মাসে (জানুয়ারি -সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল (ইপিএস) ১ টাকা ৬০ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ৪১ টাকা ২৬ পয়সা।

লিন্ডে বিডি: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি লিন্ডে বিডি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ চলতি ২০২১ হিসাব বছরের নয় মাসের (জানুয়ারি -সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত ৯ মাসে (জানুয়ারি -সেপ্টেম্বর) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৯ টাকা ৪১ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪৭ টাকা ৮২পয়সা।

সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ১১ টাকা ৫৯ পয়সা বা ২৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৭ টাকা ৯৯ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ টাকা ৬৭ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ৩৮৫ টাকা ১৬ পয়সা।

ওয়াটা কেমিক্যালস: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ঔষধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি ওয়াটা কেমিক্যালস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই’২০-সেপ্টেম্বর’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বুধবার (২০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি’২১-মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৮ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২ টাকা ০৪ পয়সা। আর গত ৯ মাসে (জুলাই’২০ -মার্চ’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৭৯ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল (ইপিএস) ৮ টাকা ৬৪ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ৬০ টাকা ২৪ পয়সা।

গ্রামীণফোন: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকমিনিউকেশন খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, তৃতীয় প্রান্তিকে নয় মাসে (জানুয়ারি’২১-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১৯ টাকা ২৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৯ টাকা ৮৯ পয়সা ।

আলোচিত প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৩৩ টাকা ৮৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৮ টাকা ৬১ পয়সা। গত ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩০ টাকা ৮২ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে তিন মাসে (জুলাই’২১-সেপ্টেম্বর’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৬ টাকা ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৫৯ পয়সা ।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

তৃতীয় প্রান্তিকে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৩৬ পয়সা। এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর’২১) ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৬৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে তা ২ টাকা ৩০ পয়সা ছিল। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৪০ টাকা ৫৯ পয়সা।

ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২১) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ০৫ পয়সা।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন’২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৩০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৫ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৭ টাকা ২৯ পয়সা।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ারদর বাড়তে থাকলেও আর্থিক স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি হয়নি। টানা তৃতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটি লোকসান দিল আর এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ার থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৪৭ পয়সা। আগের বছর এই সময়ে লোকসান ছিল ১৫ পয়সা।

এর মধ্যে ৩২ পয়সা লোকসান ছিল জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত। আর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থেকে তিন মাসে লোকসান হয়েছে ১৫ পয়সা। বৃহস্পতিবার কোস্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে এই অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গত বছর তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটি লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হয়ে এসেছিল। সে বছর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথমবারের মতো শেয়ার প্রতি ১৭ পয়সা আয় করে চমক দেখায়। তবে অর্থবছর শেষে সেই লোকসানের বৃত্তেই থাকে।

লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে না পারলেও গত এক বছরে ব্যাংকটির শেয়ার মূল্যে উল্লম্ফন হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ ব্যাংক গত বছর আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও সেগুলোর শেয়ার মূল্য বেড়েছে কমই। বিপরীতে লভ্যাংশ দিতে না পারা আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর এই সময়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।

গত বছরের জুলাইয়ে শেয়ারদর ২ টাকা ৮০ পয়সা থাকলেও বর্তমান দর ৫ টাকা ৫০ পয়সা। তবে মাঝে একবার শেয়ারদর বেড়ে ৭ টাকা ৪০ পয়সা হয়ে যায়। ব্যাংকটি মুনাফায় ফিরছে, এমন গুঞ্জনের পাশাপাশি মালিকানা বদলের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর শেয়ারমূল্য বাড়তে থাকে। পাশাপাশি বাড়ে লেনদেন। তবে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনে দুর্বল নানা কোম্পানির পাশাপাশি আইসিবি ইসলামীও ব্যাপক দর হারিয়েছে। মাঝে দাম এক পর্যায়ে ৪ টাকা ৭০ পয়সাতেও নেমে গিয়েছিল। পরে কিছুটা বাড়ে।

কোম্পানিটির লোকসানের পাশাপাশি শেয়ার প্রতি দায়ও বাড়ছে। এই কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কোনো সম্পদ নেই। উল্টো দায় আছে ১৮ টাকা ১ পয়সা। এটি গত সেপ্টেম্বরের হিসাব। গত বছরের ডিসেম্বরে এই দায় ছিল ১৭ টাকা ৫৪ পয়সা।