শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলের (সিএমএসএফ) আকার ক্রমেই বড় হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফান্ডের আকার দাঁড়িয়েছে ৩২০ কোটি টাকা। আরও কিছু চেক বা ব্যাংক ড্রাফট নিয়ন্ত্রক সংস্থার হাতে এসেছে। শিগগির বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ফান্ডের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাবে। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, শিগগির এ ফান্ডের আকার আরও বড় হবে। কয়েকশ কোটি ফান্ডে জমা হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

তথ্য মতে, গত শনিবার পর্যন্ত বিএসইসিতে ২২০ কোটি টাকার নগদ অবণ্টিত লভ্যাংশ জমা হয়েছে। তার সঙ্গে নতুন করে আরও প্রায় ১০০ কোটি টাকার চেক ও ব্যাংক ড্রাফট জমা হয়েছে। অর্থাৎ নগদ ও বোনাস শেয়ার মিলে ৩১০ কোটি টাকা ফান্ডে জমা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ ফান্ডের আকার বড় হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে বিএসইসিতে যোগাযোগ করা হলে সংস্থাটির নির্বাহী পলিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইতোমধ্যে এ ফান্ডে কিছু অর্থ জমা পড়েছে। শিগগির আরও মোট অঙ্কের অর্থ জমা পড়বে বলে আশাবাদী।

এর আগে স্থিতিশীলতা তহবিলের বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক সচিব নজিবুর রহমানকে। অন্য সদস্যরা হলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিলা দীপ্তি, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আমিন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল,

সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি আজম জে চৌধুরী ও আইসিএমএবির সাবেক সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ। গত জুলাইয়ে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১’ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে এ তহবিলে ২০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে জানায় বিএসইসি। কোনো কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার পর তা তাদের ডিভিডেন্ড অ্যাকাউন্ট থেকে বিনিয়োগকারীদের নামে পাঠিয়ে দেয়া হয়। নগদ লভ্যাংশ সরাসরি বিনিয়োগকারীদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। স্টক লভ্যাংশ জমা হয় তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে।

যাদের নামে শেয়ার তারা কেউ মারা গেলে, বিদেশে চলে গেলে কিংবা দীর্ঘদিন খোঁজ না রাখলে তাদের ব্যাংক হিসাব বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যায়। বিও হিসাবের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। এমন ক্ষেত্রে লভ্যাংশের টাকা বা শেয়ার বিনিয়োগকারীর ব্যাংক বা বিও অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে কোম্পানির কাছে ফেরত যায়। বিনিয়োগকারীর মৃত্যুর পর অনেক সময় তথ্য বা কাগজপত্রের অভাবে তার মনোনীত উত্তরাধিকারও সেই টাকা বা শেয়ার আর দাবি করেন না।

এর বাইরেও আইনি জটিলতা বা অন্য কারণে লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীর হাতে পৌঁছায় না অনেক সময়। তখন কোম্পানি ওইসব লভ্যাংশ ‘সাসপেন্ডেড’ হিসাবে জমা দেখিয়ে চূড়ান্ত আর্থিক বিবরণী তৈরি করে। সিডিবিএল হিসাবে থাকা ওই রকম ৩ হাজার ৩১৫টি সাসপেন্ডেড হিসাবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার অবণ্টিত ও দাবিহীন লভ্যাংশের তথ্য মিলেছিল।

যদিও বিএসইসির প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্থ জমা পড়েনি। কোম্পানিগুলোকে এ টাকা গত ৩০ আগস্টের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হওয়ার ২০ দিন পরও প্রত্যাশা অনুসারে টাকা জমা পড়েনি।