শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: করোনাভাইরাস মহামারিতে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে মন্দাভাব পরলেও পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বরংচো করোনার মধ্যেও পুঁজিবাজারে চাঙ্গা অবস্থা বিরাজ করছে। ফলে ঘুরে ফিওে পুঁজিবাজারে সব খাতের শেয়ারের দাম বাড়ছে। তবে যে হারে বীমা খাতের শেয়ারের দাম বাড়ছে সে হারে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারের দাম বাড়েনি। বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর দ্বিগুণ থেকে আটগুণ পর্যন্ত বাড়ছে। শেয়ার দর বাড়াতে কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও অনেক বেড়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিই রেশিও বিবেচনায় এখন অনেক খাতের শেয়ারের চেয়ে আর্থিক খাতে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে মনে করছেন। কারন এ খাতের অধিকাংশ কোম্পানির পিই রেশি কম। তারপরও মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিবেচনায় আর্থিক খাতের ১২ কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগ উপযোগি অবস্থায় রয়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এর মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ উপযোগি অবস্থায় রয়েছে ৫ কোম্পনি। আর বিনিয়োগ উপযোগি অবস্থায় রয়েছে আরও ৭ কোম্পানি।  নিরাপদ বিনিয়োগ উপযোগি অবস্থায় থাকা ৫ কোম্পানি হলো: আইডিএলসি, ডিবিএইচ, আইপিডিসি, জিএসপি ফাইন্যান্স ও ফনিক্স ফাইন্যান্স।

কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও ২০-এর নিচে। আর বিনিয়োগ উপযোগি থাকা বাকি ৭ কোম্পানি হলো: উত্তরা ফাইন্যান্স, বে-লিজিং, বিডি ফাইন্যান্স, ইসলামিক ফাইন্যান্স, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল হাইজিং ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্স।

কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও ৩০-এর নিচে। অন্যদিকে, খাতটিতে ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে ৩টি কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলো হলো-আইসিবি, প্রিমিয়ার লিজিং ও প্রাইম ফাইন্যান্স। কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও ৮০ থেকে ৪১৫ পর্যন্ত। অপরদিকে, লোকসানের কারণে ৮টি কোম্পানির পিই রেশিও নেগেটিভ।

কোম্পানিগুলো হলো-বিআইএফসি, এফএএস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, মাইডাাস ফাইন্যান্স, লেনদেন বন্ধ পিএলএফএস ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। লোকসানের কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। পিই রেশিও ২০-এর নিচে থাকা ৫ কোম্পানি: সর্বশেষ শেয়ার দর অনুযায়ি, আইডিএলসির পিই রেশিও ১৩.১৮, ডিবিএইচের ১৪.৮২, আইপিডিসির ১৭.৯৭, জিএসপি ফাইন্যান্সের ১৮.১১ এবং ফনিক্স ফাইন্যান্সের ১৮.০৬।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ২০২০ অর্থবছরের জন্য ডিভিডেন্ড দিয়েছে ডিবিএইচ ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ১৫ শতাংশ বোনাস, আইডিএলসি ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস, আইপিডিসি ১২ শতাংশ ক্যাশ, ফনিক্স ফাইন্যান্স ৬ শতাংশ ক্যাশ ও ৬ শতাংশ বোনাস, জিএসপি ফাইন্যান্স ৫.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ৫.৫০ শতাংশ বোনাস।

পিই রেশিও ৩০-এর নিচে থাকা ৭ কোম্পানি: সর্বশেষ শেয়ার দর অনুযায়ি, উত্তরা ফাইন্যান্সের পিই রেশিও ২০.০৪, ইসলামিক ফাইন্যান্সের ২১.০১, ন্যাশনাল হাইজিং এন্ড ফাইন্যান্সের ২৪.২২ বে-লিজিংয়ের ২৫.১৭, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ২৫.৯০, বিডি ফাইন্যান্সের ২৭.৪৮ এবং লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের ২৯.০৮।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ২০২০ অর্থবছরের জন্য উত্তরা ফাইন্যান্স ডিভিডেন্ড দিয়েছে ১৫ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস, ন্যাশনাল হাইজিং এন্ড ফাইন্যান্স ১৫ শতাংশ ক্যাশ, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স ১২ শতাংশ ক্যাশ, বিডি ফাইন্যান্স ৬ শতাংশ ক্যাশ ও ৬ শতাংশ বোনাস, ইসলামিক ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ এবং ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ১০ শতাংশ ক্যাশ। ২০২০ অর্থবছরের জন্য বে-লিজিং এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।

পিই রেশিও ৮০-এর উপরে থাকা ৩ কোম্পানি: সর্বশেষ শেয়ার দর অনুযায়ি, আইসিবির পিই রেশিও ৮৬.২২, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৯২.০৫ এবং প্রাইম ফাইন্যান্সের ৪১৫। কোম্পানিগুলো মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ২০২০ অর্থবছরের জন্য প্রাইম ফাইন্যান্স কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। প্রিমিয়ার লিজিং এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। আগের অর্থবছরে কোম্পানিটি কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি।

আইসিবি জুন ক্লোজিং বিধায় এবছর এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। আগের বছর কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৫ শতাংশ ক্যাংশ ও ৫ শতাংশ বোনাস। পিই রেশিও নেগেটিভ থাকা ৮ কোম্পানি: লোকসানি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২০২০ অর্থবছরের জন্য মাইডাস ফাইন্যান্স ২.৫০ শতাংশ ক্যাশ ও ২.৫০ শতাংশ বোনাস, ফারইস্ট ফাইন্যান্স ২ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

২০২০ অর্থবছরের জন্য ইউনিয়ন ক্যাপিটাল কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। আর বিআইএফসি, এফএএস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং লেনদেন বন্ধ থাকা পিএলএফএস ২০২০ সালের জন্য এখনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি।