শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৭ কোম্পানির অস্তিত্ব নিয়ে দিন দিন বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা বাড়ছে। বছর শেষে প্রতিটি কোম্পানির কাছ থেকে ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ আশা করেন বিনিয়োগকারীরা। অথচ তালিকাভুক্ত এই ৭ কোম্পানি নানা ধরণের সমস্যা দেখিয়ে গত বছর ডিভিডেন্ড থেকে বঞ্চিত করে আসছে বিনিয়োগকারীদের।

এ বছর কোম্পানিগুলোর ডিভিডেন্ড দেওয়ার সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা। আগের অর্থবছরে (২০১৮-১৯) মুনাফা হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়নি। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনার প্রভাবে তিন মাস (এপ্রিল-জুন) ব্যবসা করতে পারেনি কোম্পানিগুলো। ফলে নতুন ‘অজুহাতে’ কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ দেওয়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

একাধিক বিনিয়োগকারীরা বলছেন, লোকসান হওয়া সত্ত্বেও বেশ কিছু কোম্পানি লভ্যাংশ দিয়েছে। আর ওই ৭ কোম্পানি মুনাফায় থেকেও লভ্যাংশ দেয়নি। বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল। লভ্যাংশ না দেওয়ায় বর্তমানে কোম্পানিগুলো ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ফলে গত এক বছরে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

তাই গতবারের মতো ২০১৯-২০ অর্থবছরে কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ না দিয়ে যেন বিনিয়োগকারীদের ঠকাতে না পারে সেজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চারটি হলো- বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, সালভো কেমিক্যাল, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, খান ব্রাদার্স পিপি, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, প্রাইম ইন্সুরেন্স। এছাড়া একই অভিযোগ রয়েছে আরও তিনটি কোম্পানির বিরুদ্ধে।

তথ্য মতে, সালভো কেমিক্যালের ইপিএস হয়েছে ৬১ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১০ টাকা ১০ পয়সা। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট শেয়ারটির দর ছিল ১৫ টাকা ৬০ পয়সা। খান ব্রাদার্স পিপির ইপিএস হয়েছে ২৫ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬ টাকা ১০ পয়সা। ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট শেয়ারটির দর ছিল ১১ টাকা ৪০ পয়সা।

জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের ইপিএস হয়েছে ৪৩ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট শেয়ারটির দর ছিল ৫ টাকা ১০ পয়সা। বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের ইপিএস হয়েছে ৫৬ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১০ টাকায়। ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট শেয়ারটির দর ছিল ১৬ টাকা ১০ পয়সা।

সালভো কেমিক্যালের কোম্পানি সচিব অমল কৃষ্ণা রায় বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারেই ভালো চলছে না। সার্বিক দিক বিবেচনায় এ পরিস্থিতিতে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়া যাবে কি-না তা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের সচিব তপন কুমার সরকার বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কোম্পানির ব্যবসা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। বেশ কয়েক মাস ধরে কোম্পানির পণ্য বিক্রি নেই বললেই চলে। তাই সারা বছরের আয়-ব্যয় হিসাব-নিকাশ করে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। তা ই লভ্যাংশ দেওয়া যাবে কি, যাবে না তা আগাম বলা যাচ্ছে না। বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের কোম্পানি সচিব অসিম কুমার বড়ুয়া এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।