শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: করোনা মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে জনজীবন ও অর্থনৈতিক কাজকর্ম বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও রমরমা ব্যবসা করেছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত তামাকজাত পণ্যের বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো। কোম্পানিটির মুনাফার চিত্র সেই আভাসই দিচ্ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর মুনাফা ৬৯ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সভা শেষে প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে মুনাফার এ তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম আঘাত হানে গত ৮ মার্চ। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ফলে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। সাধারণ ছুটির মধ্যে সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা থাকলেও করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি কোনো প্রতিষ্ঠানই। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসায় এপ্রিল-জুন এই তিন মাসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের মুনাফায় ধাক্কা লেগেছে।

বাংলাদেশে বেনসন ও পলমল সিগারেটের মাধ্যমে বাজারে বড় ধরনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বিশ্ববাজারে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে। ডানহিল, লাকি স্ট্রাইক, কেন্ট, পলমল, কুল, বেনসন এবং রথম্যান্স তামাকজাত পণ্যের উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠানটি তামাকজাত পণ্য বিক্রির দিকে থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। বিশ্বজুড়ে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করা কোম্পানিটি বাংলাদেশে ব্যবসা করে প্রতিবছরই মুনাফা করছে। ফলে নিয়মিত ভালো লভ্যাংশ পাচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা। মহামারি করোনার মধ্যেও কোম্পানিটির এ রমরমা ব্যবসা থেমে নেই।

ফলে চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১৬ টাকা ৪৮ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৯ টাকা ৭৩ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ৬ টাকা ৭৫ পয়সা বা ৬৯ শতাংশ। এপ্রিল-জুনের মতো জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকেও কোম্পানিটির ব্যবসা ছিল রমরমা। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ব্যবসা করে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১৬ টাকা ৮৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ টাকা ৪৪ পয়সা। অর্থাৎ মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয় ৪৭ শতাংশ।

করোনা মহামারির মধ্যে এমন ব্যবসা করায় বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৩৩ টাকা ৩৫ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় ২১ টাকা ১৭ পয়সা। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে মুনাফা বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। মুনাফার পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যও আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯২ টাকা ২০ পয়সা, যা ২০১৯ সাল জুন শেষে ছিল ১৮০ টাকা ৭০ পয়সা।

এদিকে অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৮৩ পয়সা, যা ২০১৯ সালের সালের জানুয়ারি-জুন সময়ে ছিল ঋণাত্মক ৫৩ টাকা ৬৯ পয়সা।