bsec lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সহজ শর্তে ২৬৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা বিনিয়োগের জরুরী উদ্যোগ নিয়েছে। আর এই টাকাটি যাতে সরাসরি বিনিয়োগকারীদের হাতে যায় এবং শুধুমাত্র শেয়ার কেনার কাজে ব্যবহার করতে পারে তার নিশ্চয়তার বিধানসহ অনেকগুলো সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার আইসিবি কার্যালয়ে অবিতরনকৃত ওই টাকাটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরনের জন্য কি কি সুবিধা দেয়া যায় এ নিয়ে বিএসইসি’র এক জরুরী বৈঠকে কিছু প্রস্তাবনা তৈরী করে  অর্থ মন্ত্রনালয়ের কাছে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির এই প্রস্তাবটি দু’একদিনের মধ্যেই মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে এবং সেখান থেকে অনুমোদিত হয়ে আসলেই বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ২৬৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা পৌছে যাবে বিনিয়োগকারীদের হাতে।

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সরকারের প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় বরাদ্দকৃত ৯০০ কোটি টাকার মধ্যে বিতরনকৃত ৬৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার বাহিরে অবিতরনকৃত ওই টাকাটি এখন সহজ শর্তে বিতরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি গঠিত এ সংক্রান্ত তদারকি কমিটি।  সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসবি এই টাকা মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মাধ্যামে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিতরন করবে।

সূত্র জানায়, আইসিবি’র মাধ্যমে বিতরনকৃত পুনঃঅর্থায়নের ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধের সময়সীমা শেষ হচ্ছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। বাজারের লেনদেন মন্দায় যার এ অর্থ গ্রহণ করেছে তারাও বিপাকে পড়েছে। ফলে, এ অর্থের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর সুপারিশ করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা । একই সাথে ফান্ডের অর্থে সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করার সুপারিশও করা হবে।

এ বিষয় আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন পড়েছে খুব কম। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের ফান্ড হওয়ায় এখানে আইসিবি কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। জুনের ৩০ তারিখের মধ্যেই যোগ্য যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন পেতে চান তাদের আবেদন করতে হবে। এরপর আবেদনের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। জুনে যারা আবেদন করবেন তাদের জন্যও আলাদাভাবে কোন সময় বাড়ানো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা জুন বা জুনের ৩০ তারিখের আগে ঋণ নেবেন তারা প্রান্তিক অনুযায়ী হিসাব করলে দুটি ইন্সটলমেন্ট পাবেন। তবে আলাদা করে সময় বাড়ানো হবে না। সবার জন্যই ঋণ পরিশোধের শেষ সময় এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর।

নাম প্রকাশ করার শর্তে এক ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ঋণের শর্তগুলো বেশ জটিল। আর বন্ডে স্বাক্ষর দিয়ে হাউসগুলোকে টাকা আনতে হয়। কিন্তু ঋণ নেয়ার পরে বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলেও সুদাসল ব্রোকারেজ হাউসকে দিয়ে দিতে হবে এমন শর্তের কারণেই ব্রোকারেজ হাউসগুলো ঋণ পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কারণ ঋণের অর্থ দিয়ে শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের ওপর হাউসগুলোর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। যার কারণে টাকা নিতে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

জানা যায়, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যেমে পুনঃঅর্থায়ন ফান্ড নামে ৯০০ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের এ ফান্ডের অর্থ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যেমে দেওয়া হয়। ফান্ডের অর্থ পাওয়ার জন্য আবেদনের সময় শেষ হচ্ছে আগামী ৩০জুন।ডিসেম্বরের ৩১ তারিখের মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করার শর্ত দেওয়া ছিল।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি তহবিল তদারক কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় আইসিবি। গত ১৯ জানুয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় গঠিত বিশেষ তহবিলের ৯০০ কোটি টাকার দ্বিতীয় কিস্তির ৩০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড় করে। তহবিলের অর্থ ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে বিতরণ করবে।

উল্লেখ্য, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুন:অর্থায়ন তহবিলের আওতায় এখন পর্যন্ত ২৪ হাজার ৯৮৮ অর্থাৎ প্রায় ২৫ হাজার বিনিয়োগকারীকে ৩৪টি সিকিউরিটিজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৬৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে।