sharebazar lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের পর গত সোমবার এক্সপোজার বিষয় বাংলাদেশ ব্যাংকেরে ইতিবাচক বক্তব্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে  দেশের দুই পুঁজিবাজার। ফলে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে শুরু করছেন। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে লেণদেন ও সুচক বাড়ার স্পন দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা একটি স্থিতিশীল বাজারের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিকট দীর্ঘদিন দিন দাবী করছেন।

কিন্তু বিনিয়োগকারীদের সে দাবি ছিল ঘুরেবালি। দীর্ঘ ৬ বছর পর বিনিয়োগকারীরা এবার স্থিতিশীল বাজার দেখতে চায়। পাশাপাশি এক্সপোজার বিষয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কেটে গেছে তা অনেকটাই কেটে গেছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীলতার আভাস দিলে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বাজারে বিনিয়োগমুখী হবেন বলে একাধিক বিনিয়োগকারী শেয়া্রবার্তা ২৪ ডটকমকে বলেছেন।

তথ্য অনুযায়ী, দশটি ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে। আর দুটি ব্যাংক তাদের ধারণকৃত শেয়ার ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে প্রদত্ত ঋণ সাবসিডিয়ারি ক্যাপিটালে রূপান্তরের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সমন্বয়ে কোনো ধরনের শেয়ার বিক্রি করতে হবে না বলে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে  শুভঙ্কর সাহা বলেছিলেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকসমূহের সোলো ও কনসোলিটেড উভয় ভিত্তিতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষিত নীতি সহায়তার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি ব্যাংক তাদের ধারণকৃত শেয়ার ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে প্রদত্ত ঋণ সাবসিডিয়ারি ক্যাপিটালে রূপান্তরের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট আবেদন জানিয়েছে।

তাদের এ আবেদন দ্রুত বিবেচনা করার প্রয়োজনীয় কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়েছে। অন্য যে আটটি ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে সেসব ব্যাংককে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট আবেদনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তবে ব্যাংক থেকে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি সংক্রান্ত আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণের পূর্বে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের প্রয়োজন থাকায় এই আবেদন ব্যাংক থেকে আসতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। ফলে অনুমোদন প্রদানে কিছুটা সময় লাগছে।

ব্যাংক সমূহের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ত্বরিত অনাপত্তি প্রদান করা হবে। এ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে একদিকে ব্যাংকগুলোর সাবসিডিয়ারি মূলধন বৃদ্ধি পাবে, অপরদিকে তাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমা কমে আইনি সীমার মধ্যে নেমে আসছে। এভাবেই সকল ব্যাংকই আইনি সীমার মধ্যে চলে আসবে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগের (সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট) সমন্বয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সময় না বাড়িয়ে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বাড়ানোর মাধ্যমে সমন্বয়ের যে নীতি বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রহণ করেছে তা বাজারের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি ফলপ্রসূ হবে।

ফলে বাজারে সেল প্রেসার থাকবে না। আর সেল প্রেসার কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন উদ্যোগ বর্তমান বাজারের জন্য ইতিবাচক। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক্সপোজার নিয়ে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিলো তা কেটে গেছে। ফলে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী মাহাবুব হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোজার বিষয় আমাদের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল তা অনেকটা কেটে গেছে। এখন নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত ইতিবাচক সিন্দান্ত নিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করা। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাজারমুখী করা।

উল্লেখ্য, এক্সপোজার বিষয়ে গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, শেয়ারবাজারে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয়ের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংককে কোনো শেয়ার বিক্রি করতে হবে না। শেয়ারবাজারে বর্তমানে নির্ধারিত সীমার চেয়ে সামান্য বেশি বিনিয়োগ রয়েছে ১০টি ব্যাংকের। তা আইনি সীমায় নামিয়ে আনতে তাদের জন্য কেস টু কেস ভিত্তিতে সমাধান দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।