শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার ১০ টাকায় কৃষকদের জন্য ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে কৃষকদের প্রায় এক কোটি এক লাখ ৫১ হাজার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ‘কৃষিবিদ দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ তথ্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, কৃষকদের প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ কৃষক উপকরণ কার্ড দেওয়া হয়েছে। বর্গা চাষিদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে জামানতবিহীন কৃষি ঋণ প্রদানের। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ৪শ’ ৮৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ‘কৃষিবিদ দিবস-২০২২’ উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে জেনে আমি আনন্দিত। কৃষিবিদ দিবসে আমি দেশের কৃষিবিদ, কৃষক এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কৃষিবিদের চাকরি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদানের ঘোষণা দেন, যা এদেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিদের জন্য ছিল ঐতিহাসিক মাইলফলক। ফলে অধিকতর মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের সরকার কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় সারের জন্য ১৮ জন কৃষককে প্রাণ দিতে হয়েছিল। পক্ষান্তরে, কৃষিবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক দফা সারের দাম কমিয়েছে। সেচের বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ রিবেট প্রদান করা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সার, বিদ্যুৎ ও ইক্ষু খাতে মোট ৮২ হাজার ৮শ’ ৬৬ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষকের পুষ্টি নিশ্চিতকরণ ও আয়ের উৎস সৃষ্টি করতে প্রতিটি ইউনিয়নে ৩২টি করে মোট এক কোটি ৪০ লাখ ৩শ’ ৮৭টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হচ্ছে। নিরাপদ শাক-সবজির যোগান ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে রাজধানীসহ ৪১ জেলায় ‘কৃষকের বাজার’ স্থাপন করা হয়েছে।

কৃষকের কৃষি যন্ত্রের ক্রয়মূল্যের ওপর ৫০-৭০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তার মাধ্যমে হ্রাসকৃত মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। ২০১০ থেকে ২০২১ পর্যন্ত কৃষকের জন্য মোট ৭১ হাজার ২৪০টি কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়। যার মধ্যে অত্যাধুনিক কম্বাইন হারভেস্টর, রিপার, সিডার, পাওয়ার টিলারসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি রয়েছে।

বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে কৃষিতে রোল মডেল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বে ধান ও সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম, কাঁঠাল উৎপাদনে দ্বিতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, পেয়ারাতে অষ্টম, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় এবং রপ্তানিতে প্রথম।

খাদ্য শস্যের উৎপাদনে ২০০৮-২০০৯ সালের তিন কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ২০২০-২০২১ সালে ৪ কোটি ৫৫ লাখ পাঁচ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বিগত এক দশকে বাংলাদেশে মৎস্য উৎপাদনের গড় প্রবৃদ্ধির হার ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। বাংলাদেশে বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে তৃতীয় স্থান এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থান ধরে রেখেছে।