শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম: শেয়ারবাজারে খাদ্য ও আনুসঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডের অ-বন্টিত বা অ-দাবীকৃত বা অনিষ্পন্ন লভ্যাংশ যাচাই করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) দুই কর্মকর্তা এ তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন।

সম্প্রতি বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি আদেশে ফু-ওয়াং ফুডকে নিয়ে এ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বিষয়টি ফু-ওয়াং ফুড এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও সিডিবিএলের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ শাফায়েত আহমেদ সিদ্দীক সুহৃদ। এ সংক্রান্ত আদেশ জারি পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

সম্প্রতি ফু-ওয়াং ফুডের সাসপেন্স বিও হিসাবটি তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএসইসি। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসি কোম্পানিটির সাসপেন্ড বিও হিসাবে অ-বন্টিত বা অ-দাবীকৃত বা অনিষ্পন্ন লভ্যাংশের পরিমাণ যাচাই করতে তদন্ত গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে গঠিত তদন্ত কমিটি ফু-ওয়াং ফুডের অন্যান্য বিষয়াদিও খতিয়ে দেখবে।

সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ২১; বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭(ক) এবং ডিপোজিটরি আইন, ১৯৯৯ এর ধারা ১৩ অনুযায়ী এ তদন্ত কমিটি গঠন করা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসি’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘অ-বন্টিত লভ্যাংশ সংক্রান্ত বিষয়াদি যাচাই-বাছাই করতে ফু-ওয়াং ফুডের সাসপেন্স বিও অ্যাকাউন্ট তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কমিটিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে ফু-ওয়াং ফুডের কোম্পানি সচিব মো. শরীফ আল-মাহমুদ বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে এখনও বিএসইসির কোনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি হাতে পেলে তারপর বিষয়বস্তু সম্পর্কে বলতে পারব।’

এদিকে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে অ-দাবীকৃত বা অ-বন্টিত কিংবা অনিষ্পত্তিকৃত নগদ লভ্যাংশ কিংবা বিনিয়োগকারীকে ফেরত দেয়া হয়নি এমন অর্থ কিংবা এ ধরনের অন্যান্য অর্থ পুঞ্জীভূত সুদসহ পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

এর আগে এ অর্থ জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত। তবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই অর্থ জমা দেওয়ার জন্য আরো এক মাস সময় বাড়িয়ে দেয় বিএসইসি।

ইতোমধ্যে অনেক তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ-দাবীকৃত কিংবা অ-বন্টিত নগদ লভ্যাংশের বিষয়ে তাদের শেয়ারহোল্ডারদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। এক্ষেত্রে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ গ্রহণ করার জন্য উপযুক্ত প্রমাণসহ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করা না হলে এ বছরের ২৯ আগস্টের মধ্যে ওই অর্থ পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিলে স্থানান্তর করা হবে। তবে তহবিলে স্থানান্তর করা হলেও উপযুক্ত প্রমাণ সাপেক্ষে যেকোনো সময় এই অর্থ দাবি করতে পারবেন শেয়ারহোল্ডারা।

প্রসঙ্গত, শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানের পলিসি অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পৃথক সাসপেন্স বিও হিসাব রয়েছে। যেখানে শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান না করা অ-বন্টিত বা অ-দাবীকৃত বা অনিষ্পন্ন লভ্যাংশ রাখা হয়।