স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের টানা দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। মুলত মার্জিন ঋণ ইস্যুতে আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের পতন হচ্ছে। তবে পুঁজিবাজারকে দীর্ঘদিন ধরে পঙ্গু করে রাখা ‘নেগেটিভ ইকুইটি’র জাল থেকে মুক্ত করতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন ঋণ নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে।

তবে এই পরিবর্তনের খবরে বাজারে দেখা দিয়েছে তীব্র অস্থিরতা। বিনিয়োগকারীদের বড় একটি অংশ বলছেন, বাজারকে সুস্থ করার বদলে এই কঠোর নীতি উল্টো ভয় ধরিয়ে দিয়েছে, ফলে আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকের টানা পতন হচ্ছে।

বিএসইসি জানিয়েছে, সংশোধিত মার্জিন ঋণ বিধিমালা দ্রুতই গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। কমিশনের দাবি, নতুন নিয়মে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারী উভয়েরই সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। কিন্তু বাজারের বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। ৫ সেপ্টেম্বর ডিএসই প্রধান সূচক ছিল ৫ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে, অথচ এক মাসেরও কম সময়ে তা নেমে এসেছে ৫ হাজার ৮৬।

অথাৎ গত এক মাসের ব্যবধানে ডিএসইতে ৩৬১ পয়েন্ট সূচকের দরপতন হয়েছে। এছাড়া বাজার মূলধন প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে। তবে টানা সূচকের দরপতন হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোন ভুমিকা নিচ্ছে না।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মার্জিন ঋণ নিয়ে অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে মার্জিন ঋণ ইস্যুতে স্পষ্ট ভাবে বলতে হবে। কারণ পুঁজিবাজার সেনসেটিভ বাজার। এখানে যেকোন আতঙ্কে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠে। এতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জানা গেছে, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ফলে দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৮৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৬ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮১ টির, দর কমেছে ২৬০ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৫ টির। ডিএসইতে ৩৯৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৬৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৬১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩২৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৮৯ টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে ৫৭ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০৪ টির এবং ২৮ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।