পুঁজিবাজারে টানা দরপতনে অস্থির হয়ে পড়ছে বিনিয়োগকারীরা। বর্তমান বাজারের গতিবধি বুঝে উঠতে পারছে না বিনিয়োগকারীরা। তাছাড়া হঠাৎ করেই লেনদেনে ধস নেমেছে পুঁজিবাজারে। কারসাজি চক্র বাজারকে অস্থির করে তুলছে বলে অভিযোগ করেন বিনিয়োগকারীরা। তা না হলে বাজারে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি । তার জন্য বাজার ধ্বস নামবে।

টানা ৭ কার্যদিবস পর সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। দিনশেষে লেনদেন হয়েছিল ৪১৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। কিন্তু মঙ্গলবার লেনদেন তো বাড়েই-নি বরং লেনদেন নেমে গেছে ২০০ কোটি টাকার ঘরে। সোমবারের তুলনায় সাড়ে ২৮ শতাংশ কমে দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ২৯৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। এটি গত সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে ডিএসইর সর্বনিম্ন লেনদেন।

এর আগে গত ১২ মার্চ ডিএসইতে সর্বনিম্ন ২৮৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিল। এদিকে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে মাঝারি ধরনের পতন হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় ৬৪ শতাংশ ইস্যুর শেয়ারের দর কমেছে। এর ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয়েছে ৪১.২৪ পয়েন্ট। এর ফলে ডিএসইর এ সূচকটি ফের ৪৬০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। দিনশেষে সূচক গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫৮৯.৩৩ পয়েন্টে।

বাজার পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, বাজার যখন তেজী অবস্থায় থাকে তখন লেনদেনের পরিামাণও বেশি হয়। তেজী মার্কেটে বিনিয়োগ করলে স্বল্প সময়ে মুনাফা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় ওইসময় বিনিয়োগকারীরা অনেক বেশি সক্রিয় থাকে। মন্দা মার্কেটে বিনিয়োগে লোকসানের আশঙ্কা করেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে মন্দা মার্কেটে লেনদেনের পরিমাণ কম হয়ে থাকে। বর্তমান মন্দা মার্কেটের কারণে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। এ ছাড়া শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সীমা কমানোর ফলেও বাজারে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, আগে ব্যাংকগুলো তার দায়ের ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারত। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা মূলধনের ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সক্ষমতা অনেক কমে গেছে।

এদিকে মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে থাকে। লেনদেনের শেষ অবধি কোম্পানিগুলোর দর কমে যাওয়ার এ প্রবণতা বজায় ছিল।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩২১টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ৭৪টির, কমেছে ২০৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টির দর। ডিএসইর প্রধান খাতগুলোর অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে।

লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। দিনশেষে কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৯০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহজিবাজার পাওয়ারের লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ১০ কোটি ২৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইউনাইটেড এয়ার। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে- কেডিএস এক্সেসরিজ, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, স্কয়ার ফার্মা, আমান ফিড, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, খুলনা পাওয়ার।

স্টাফ রিপোর্টার