শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে ২৬ টি বিমা কোম্পানি। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এক বৈঠকে এই আশ্বাস দেওয়া হয়। বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মাল্টিপারপাস হলে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ২৬টি বিমা কোম্পানির প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠক শেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।

কোম্পানিগুলোর হলো- হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এলআইসি (বাংলাদেশ), মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স।

এর মধ্যে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

এই ২৬ কোম্পানির বিনিয়োগ পরিস্থিতি তদারকির অংশ হিসেবে বুধবার কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএসইসি। বৈঠক শেষে বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ২৬ বিমা কোম্পানির মধ্যে যেসব কোম্পানি আইপিওতে আবেদন করেছে বা আইপিও অনুমোদন পেয়েছে তাদের প্রত্যেকে ইকুইটির ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে, বৈঠকে সে বিষয় নিশ্চিত করেছে। অন্য যারা এখনো আবেদন করেনি তাদের বিনিয়োগের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং তাদেরকে ইকুইটির ২০ শতাংশ বিনিয়োগের মাধ্যমে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করার আহ্বান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে তারা যদি কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়, সে বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করলে সহযোগিতা করা হবে। আলোচনায় উঠে এসেছে ইপিএস পজেটিভ থাকলে আইপিও’র জন্য আবেদন করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে তাদের (২৬ বিমা কোম্পানির) যে বিনিয়োগ আছে, সেটা কীভাবে বাড়ানো যায় এবং আইডিআরএ’র বিনিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে সর্বোচ্চ পরিমাণ বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে আগামী কয়েকদিন বিনিয়োগ বাড়াবে।

বৈঠকে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক স্বল্পমেয়াদি আমানত গ্রহণ করে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়। আর বিমা কোম্পানি দীর্ঘমেয়াদি ফান্ড পেয়ে থাকে। জীবন বিমা কোম্পানি অনেক দীর্ঘমেয়াদি ফান্ড পায়। সেই ফান্ড যদি তারা পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে পারে, তারা অনেক বেশি রিটার্ন পাবে। সেই বিনিয়োগের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যদি তাদের বিনিয়োগ শিক্ষার প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে কমিশন থেকে ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

বিএসইসির এই কমিশনার আরও বলেন, বিমা খাত গুরুত্বপূর্ণ খাত। অর্থনীতির উন্নয়নে এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই ভূমিকা আগামী দিনে আরও বাড়বে। সেক্ষেত্রে কমিশনের দিক থেকে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে এবং আইডিআরএ’র দিক থেকে কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন পড়লে, কমিশন থেকে আইডিআরএকে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হবে।

বৈঠকে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নিয়ে আলোচনা হয় জানিয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কেউ কেউ সভায় ফ্লোর প্রাইস নিয়ে কথা বলেছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে স্বল্প সময়ের জন্য এটা দেওয়া হয়েছে। বাজার একটা আপার ট্রেন্ডে এলে কমিশন এটা বিবেচনা করবে।

তিনি বলেন, কমিশন পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধির জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বর্তমানে অব্যাহত আছে এবং আগামীতেও থাকবে। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারের তারল্য কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি ব্যাংক এবং ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডসহ মার্চেন্ট ব্যাংককে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আমরা আশা করি এর মাধ্যমে আগামীতে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফিরে পাবে এবং তারল্য বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে লেনদেনও বৃদ্ধি পাবে।