শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতনে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। ডিএসইতে লেনদেনের শুরুতে দরপতন হলেও দিনশেষে দরপতন আরো বাড়তে থাকে। দিনশেষে ৭৩ পয়েন্ট সূচকের উধাও হয়ে গেছে। আগেরদিন সূচক কমেছিল ৩৩ পয়েন্ট। দুই দিনে সূচক কমেছে ১০৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ সপ্তাহের প্রথম দুই দিনে সূচক যা বেড়েছিল, গত দুই দিনেই তার দ্বিগুণ গায়েব হয়ে গেছে। ফলে সূচকের দরপতনে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের ধারণা, শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মনস্তাতত্ত্বিক প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে পুঁজিবাজারে। তাছাড়া বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব সামাজিক মাধ্যমে যেসব অপপ্রচার চলছে, তার প্রভাব পড়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। রোজার মাসে এক দিনে তিন শতাধিক শেয়ারের দরপতন দেখেছিল বিনিয়োগকারীরা। সেই স্মৃতি আজ আবারও ফিরে এসেছে। দরপতনের সর্বনিম্ন তলানিতে একগুচ্ছ কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের বিষয়ও দেখা গেল বেশ কিছুদিন পর।

তবে বাজার দরপতনের এই ধারা স্বাভাবিক নয় বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার মতো নয়। বরং বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পর্যন্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ঋণ নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতির যেকোন সূচকের বিবেচনায় বাংলাদেশে অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী ও সুদৃঢ়। তবে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা অল্পতেই অস্থির হয়ে যায়।

তারই প্রতিফলন হয়েছে পুঁজিবাজারে। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের অস্থির হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের আহামরি উত্থান হয়নি। যে কারণে ভয়ে বা আতঙ্কে পড়তে হবে। তারা বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৩.৬২ পয়েন্ট বা ১.১০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৯১.৯৯ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৫.৪৭ পয়েন্ট বা ১.০৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৫.১৩ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৩৩.৪১ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৪২০.৬৪ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৩৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ২৫৮ কোটি টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৫টির বা ৯.২৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৩২৩টির বা ৮৫.২৩ শতাংশের এবং ২১টির বা ৫.৫৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ২২৩.১৫ পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৩০৮.৭৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ৩০৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৩৯টির, কমেছে ২৪৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির দর। আজ সিএসইতে ২৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।