শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম কমাতে অভিনব পন্থা বা কারসাজির অভিযোগ গ্রহণ করেছেন ৯টি ব্রোকারেজ হাউসের ১৫ জন ট্রেডার। আইন লঙ্ঘন করায় এই ট্রেডারদের লেনদেন কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার বা সাসপেন্ড করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ১৫ জন ট্রেডারকে বহিষ্কারের এ নির্দেশ দিয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিন ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার ৯টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারে বিক্রয়াদেশ দর দেন শূন্য টাকা। তাদের এই বিক্রয়াদেশকে অস্বাভাবিক মনে করছে কমিশন। এছাড়া সার্কিট ব্রেকারে আগের দিনের থেকে ২% কমে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও তারা কিভাবে শূন্য দিল, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ৯ ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডারকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কমিশন। বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে অভিযুক্ত ট্রেডারদের ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন। যা সন্তোষজনক না হলে ওই ১৫ জনকে স্থায়ীভাবে শেয়ারবাজারে নিষিদ্ধসহ আর্থিক শাস্তি প্রদান করা হতে পারে।

যে কোম্পানিগুলোর শেয়ারে শূন্য দরে বিক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছিল: বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, গ্রীণডেল্টা ইন্স্যুরেন্স, নিটল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বিকন ফার্মা ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, যে ৯টি ব্রোকারেজ হাউসের ১৫ ট্রেডার লেনদেনের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছেন, সেগুলো হলো আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি, পার্কওয়ে সিকিউরিটিজ, কাইয়ুম সিকিউরিটিজ, রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস, শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ, টি এ খান সিকিউরিটিজ, জেকেসি সিকিউরিটিজ ও কাজী ইক্যুইটিজ। এর মধ্যে আইসিবি সিকিউরিটিজের ৫ জন, রশিদ ইনভেস্টমেন্ট ও শ্যামল ইক্যুইটির ২ জন করে ৪ জন এবং বাকি ৭টির ১ জন করে ট্রেডারকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ১৫ ট্রেডার আজ সোমবার লেনদেনের শুরুতেই বড় মূলধনি ও ভালো মৌলভিত্তির বেশ কয়েকটি কোম্পানির বড় অঙ্কের শেয়ার কোনো দাম উল্লেখ না করে অর্থাৎ জিরো প্রাইসে বিক্রির আদেশ দেন। তাতে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দিনের সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হয়। এতে লেনদেনের শুরুর পরপরই বাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আগের দিনের থেকে সর্বোচ্চ ২% কমে সুযোগ থাকলেও ৯টি ব্রোকারেজ হাউজের ১৫ জন ট্রেডার তালিকাভুক্ত ৯ কোম্পানির শেয়ারে শূন্য দরে বিক্রয়াদেশ দেয়। যা সন্দেহজনক ও অস্বাভাবিক। এটা দু-একজন হলে হয়তো সন্দেহজনক হতো না। এ কারনে ওই ১৫ জনকে লেনদেন কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই ১৫ জনের শূন্য দরে বিক্রয়াদেশ দেওয়ার কারনে তাদের শেয়ারগুলো ২ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে। কিন্তু সার্কিট ব্রেকারে ক্রয় ও বিক্রয়াদেশ দেওয়ার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন দর নির্ধারন করে দেওয়া থাকা সত্ত্বেও শূন্য দর কিভাবে দেওয়া সম্ভব হল, সেটাও তাদের কার্যক্রম সন্দেহ তৈরী করেছে।