standard-cermicশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে অবস্থান নিয়েছে শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত সিরামিকস খাতের স্বল্পমূলধনী স্টান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড। অস্বাভাবিক দর বাড়ার প্রবণতায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে কোম্পানিটির প্রাইস আর্নিং রেশিও বা পিই রেশিও। এদিকে শেয়ারটিকে ঘিরে কারসাজির আশঙ্কা করছেন বিনিয়োগকারীরা।

ডিএসই’র তথ্যানুযায়ী, মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৩১ দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ১৫ টাকা ৯০ পয়সা। আলোচ্য সময়ে এক কার্যদিবস ব্যতিত প্রতিদিনই শেয়ারটির দর বেড়েছে। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫০ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৬৬ টাকায় উঠে আসে। যা বিগত দুই বছরের মধ্যে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর। গেল দুই বছরে শেয়ারটির সর্বনি¤œ দর ছিলো ৩০ টাকা ৫০ পয়সা।

এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার শেয়ারটির দর আগের দিনের তুলনায় ১০ শতাংশ বা ৬ টাকা বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করেছে। একই সঙ্গে টপটেন গেইনারের শীর্ষে ও সপ্তাহিক গেইনার তালিকায়ও রয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য কার্যদিবসে শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬৬ টাকায় এবং ক্লোজিং প্রাইস ছিলো ৬৫ টাকা ৭০ পয়সা।

এদিন এ কোম্পানির ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫২৫টি শেয়ার মোট ৮৮৪ বার হাতবদল হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ৬৩ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে। যা বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্রসঙ্গত, শেয়ারের বাজার দরকে তার আয় দিয়ে ভাগ করলে মূল্য-আয় অনুপাত (প্রাইস আর্নিং রেশিও বা পিই রেশিও) পাওয়া যায়।

ঝুঁকি নির্ণয়ে দর-আয় অনুপাতই সবচেয়ে কার্যকর মাপকাঠি। এ অনুপাত যত বেশি হবে  শেয়ার তত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে। তুলনামূলকভাবে যেসব কোম্পানির পিই  রেশিও ৪০ এর নিচে সেগুলোই বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়। আর পিই রেশিও ৪০ ছাড়ালেই তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। আর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই  রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সে হিসাবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারী শেয়ারকে নিরাপদ মনে করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারী-মার্চ ’১৬) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস হয়ে ছিলো ১১ পয়সা। এদিকে নয় মাসের হিসেবে (জুলাই’১৫-মার্চ ’১৬) এ কোম্পানির ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৭৭ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যা ৩৭ পয়সা ছিলো। সে হিসেবে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া স্বল্পমূলধনী এ কোম্পানিটি সর্বশেষ সমাপ্ত অর্থবছরে (৩০ জুন’১৫) মুনাফা করে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং ইপিএস হয় ১ টাকা ৫০ পয়সা। যদিও শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি পার শেয়ার) পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে রয়েছে।

অর্থাৎ গত অর্থবছর শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা ৩৬ পয়সা। গেল পাঁচ বছরের মধ্যে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য ১৫ টাকা ৯৭ পয়সা ছিলো সর্বোচ্চ। কোম্পানিটি ২০১২ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ১০ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়ে আসছে।

‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৬ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। বর্তমানে রিজার্ভ অ্যান্ড সারপ্লাস রয়েছে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।  কোম্পানির মোট ৬৪ লাখ ৬০ হাজার ৬৫০টি শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ৪৭ দশমিক ৬০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.০২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।