sharebazer lagoশেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার কেন পথে হাটছে, এ প্রশ্ন খোদ বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। ফের পেছনের দিকেই হাঁটছে দেশের শেয়ারবাজার। টানা ৬ দিনের পতন শেষে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের সামান্য উন্নতি হলেও চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বড় ধরনের পতন হয়েছে।  এর পর আজ সামান্য সুচকের উন্নতি হয়েছে। ২০১০ সালে পুঁজিবাজার মহাধসের মহানায়করা এখনও সক্রিয়। যার কারণে ধস পরবর্তী সময়ে বাজার বারবার স্থিতিশীলতার চেষ্টা করা হলেও তা আজও স্থায়ী হয়নি। কারসাজির কবল থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার।

স্থিতিশীলতার এই চেষ্টায় যখনই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আশায় বুক বাঁধেন, তখনই কারসাজির হোতারা আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠে। কারসাজির বিরুদ্ধে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু নয় বলে ধারণা করছেন বাজার-বিশেষজ্ঞরা। সংস্থাটির এমন আচরণে নতুন করে কেউ বিনিয়োগের সাহস পাচ্ছে না পুঁজিবাজারে। এছাড়া অস্থিতিশীল বাজারেও ঘন ঘন আইপিও অনুমোদনের কারণে বিএসইসি’র ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বাজার বিশ্লেষকরা। কোনো ধরনের মৌলিক পরিবর্তন ছাড়াই বাজারে সূচকের উল্লম্ফন এবং কয়েকদিনের ব্যবধানেই এর নিম্নগতি কারসাজিরই ইঙ্গিত করে।

বাজার বিশ্লেষনে দেখা গেছে, বড় ধসের হাত থেকে গত সাড়ে পাঁচ বছর চেষ্টা করেও বাজারে স্থিতি ফিরিয়ে আনতে পারেনি বিএসইসি। কার ইঙ্গিতে কোন কারণ ছাড়াই বাজার উঠা-নামা করে তা বুঝতে পারে না সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

কারণ ছাড়া বাজার এভাবে উঠানামা করায় সব সময়ই বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে থাকেন। বাজার একটু ভাল হলেই এই আতঙ্কে বাজার থেকে বেরিয়ে পড়েন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এসব কারসাজির জন্য বরাবরের মতো এবারো অভিযোগের তীর বিএসইসি ও চিহ্নিত কারসাজি চক্রের দিকে।

তারা জানান, সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর কারসাজি থেকে কোনোভাবেই বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। এ কারসাজি চক্র পরিকল্পিতভাবে বাজারকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। বাজার-সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ বর্তমান বাজার অবস্থাকে সাপলুডু খেলা বলেও মন্তব্য করেছেন।  কারণ, ক্ষদ্র বিনিয়োগকারীরা তিল তিল করে কষ্টার্জিত পুঁজি দিয়ে শেয়ার কেনার পর বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে। আর ঠিক তখনই কারসাজি চক্র বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজার নিম্নমুখী করে।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কোম্পানিকে নিয়েও কারসাজিতে তৎপর রয়েছে এসব গোষ্ঠী। আর এভাবেই পুঁজিবাজার নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টির আড়ালে কারসাজি চক্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে চলেছে।

তবে পুঁজিবাজার ধ্বসের কারন কি এ প্রশ্ন নিয়ে এক বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমের মুখোমুখিতে। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজার ধ্বসের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দায়ী করেছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতির কারনে পুঁজিবাজারের এ পরিস্থিতির সৃষ্টি।

সরকার সহ সব মহলে আন্তরিকতা হলেও কেন পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে না। আর এ স্থিতিশীলতা না হওয়ার পেছনে ডিএসই, সিএই এর গাফিলতির কারণে মার্কেট পড়ছে বলে সাঈদ হোসেন উজ্জল নামে এক বিনিয়োগকারী অভিযোগ করেন।

তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, মার্চেন্ট লিমিট এক্সপোজারের যে ব্যাপারটি রয়েছে সেটি ক্লিয়ার না। এখনও গেজেট আকারে তা প্রকাশ হয়নি। এসব কারণে প্রতিনিয়তই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, মার্কেট পড়ছে।

তিনি বলেন, অতীতে যেখানে ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হতো পুঁজিবাজারে। আর এখন ৪শ’ থেকে ৫শ’ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়।
অনেক কোম্পানির পুঁজিবাজারে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকা উচিত। কিন্তু তাদের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ থেকে ২০শতাংশ শেয়ার রয়েছে। আবার  কিছু প্রতিষ্ঠান গ্যামিব্লিং করে লাভবান হলেও সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে থাকে। এসব কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

তিনি নতুন ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং(আইপিও) সর্ম্পকে বলেন, এমনিতেই মার্কেট তলানাতি পড়ে আছে। তারওপর নতুন করে আইপিও আসলে তা বিনিয়োগকারীদের বিপক্ষে চলে যাবে। আমার মতে, নতুন করে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে মার্কেটে আইপিও আসা ঠিক হবে না। কারণ আইপিও আসলেই বাজারে রিউমার শুরু হয়। এতে করে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।