পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি কোহিনূর কেমিক্যাল বাংলাদেশ লিমিটেডের টানা দরপতনে হতাশ হয়ে পড়ছেন এ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা তাদের মুল পুঁজি নিয়ে দু:চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন ।

বিনিয়োগতকারীদের অভিযোগ, স্মরনকালের দরপতনের রেশ কাটিয়ে উঠে কোহিনূর কেমিক্যালের শেয়ারে কয়েক বার নিটিং করছি। নিটিং করেও কোন লাভ নেই। বরং টানা দরপতনে এখন মুল পুঁজি ফিরে পাবে কিনা তা নিয়ে দু:চিন্তায় আছি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রায় এক মাস ধরে নিম্নমুখী আছে কোহিনূর কেমিক্যাল বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার দর।

এ সময়ের ব্যবধানে প্রায় ১০ শতাংশ দর হারিয়েছে রসায়ন খাতের কোম্পানিটি। বাজার বিশ্লেষনে দেখা যায়, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দুই মাসে ডিএসইতে কোহিনূর শেয়ারের দর ১০০ টাকারও বেশি বেড়ে ৪২০ টাকা ছাড়ায়। তবে এর নেপথ্যে অপ্রকাশিত কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই, কোম্পানি এমনটি জানানোর পর থেকেই নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হয়।

ডিএসইতে বৃহস্পতিবার কোহিনূর শেয়ারের দর ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩৯০ টাকায়। গত এক বছরে এ শেয়ারের দর ৩১৩ থেকে ৫২৯ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে। ২০১৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরে কোহিনূর কেমিক্যালের নিরীক্ষিত মুনাফা ছিল ১০ কোটি ৭২ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২০১৩ হিসাব বছরে যা ছিল ৯ কোটি ৩১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ২৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়।

এদিকে ২০১৫ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৫ টাকা ৬৩ পয়সা। ২০১৪ সালে ইপিএস ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা। দীর্ঘমেয়াদে কোহিনূর কেমিক্যালসের ঋণমান ‘এ প্লাস’ এবং স্বল্পমেয়াদে ‘এসটি-৩’।

এর অর্থ ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বিবেচনায় ভালো মানের কোম্পানি এটি। সর্বশেষ নিরীক্ষিত ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের পাশপাশি হালনাগাদ অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে এ ঋণমান নির্ধারণ করেছে ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (সিআরআইএসএল)। আগামী দিনগুলোয় কোম্পানি এ ঋণমান ধরে রাখতে পারবে বলে আশাবাদী রেটিং এজেন্সিটি।

সাবান, ডিটারজেন্ট, টুথপেস্ট, প্রসাধনী, ডিশ-টয়লেট-ফ্লোর ক্লিনারসহ বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে আসে ১৯৮৮ সালে। তিব্বত তাদের মূল ব্র্যান্ড। বর্তমানে কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। রিজার্ভ ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

কোম্পানির মোট শেয়ারের ৪৮ দশমিক ৭২ শতাংশ এর উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১১ দশমিক ৭ শতাংশ ও বাকি ৩৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত মুনাফা ও বাজারদরের ভিত্তিতে এ শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২৯ দশমিক ১৭, তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত মুনাফার ভিত্তিতে যা ৪৬ দশমিক ৬৫-এ ঠেকেছে।

শহিদুল ইসলাম