শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেডের আর্থিক বিবরণী এবং উৎপাদন কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গঠিত তদন্ত কমিটিকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি তদন্তের আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র বলছে, সম্প্রতি ডিএসইর এক কর্মকর্তা নিজের পরিচয় গোপন রেখে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন থেকে পণ্য কেনার জন্য কোম্পানিটির সঙ্গে যোগাযোগ করলে কোম্পানিটির এক কর্মকর্তা জানায় যে, তাদের কারখানা কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এরপর ডিএসই বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি-কে অবহিত করে এবং বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানায়।

এর প্রেক্ষিতে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের আর্থিক বিবরণী এবং কার্যক্রম খতিয়ে দেখার জন্য বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান এবং এর সহকারী পরিচালক মোঃ আব্দুল আউয়ালকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তদন্ত কমিটিকে আদেশ জারির ৬০ দিনের মধ্যে কমিশনে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বিষয়ে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে যে কারখানাটি কয়েক মাস যাবত বন্ধ রয়েছে। এখন আমরা বিস্তারিত খতিয়ে দেখতে চাই।

এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা-সিএফও মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের কারখানাটি চালু রয়েছে। আমাদের ২৪ ঘন্টা কারখানা চালানোর ক্ষমতা আছে। তবে আমরা ক্রয় আদেশ অনুযায়ী অক্সিজেন উৎপাদন করি।’ মূলত শিপইয়ার্ডগুলোই তাদের ক্রেতা।

শিপইয়ার্ডের শ্রমিকরা ভারী বৃষ্টিতে কাজ করতে পারে না বলে বর্ষায় তাদের ক্রয় অর্ডারের পরিমাণ কমে যায়। সাধারণত ঈদের ছুটিতে শ্রমিকরা গ্রামের বাড়িতে গেলে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেনের কারখানা বন্ধ থাকে। এছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের সময়ও এটি বন্ধ থাকে।

গত তিন দশক ধরে অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ করে আসছে। ২০২০ সালে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। তখন কোম্পানিটি বলেছিল, প্রাথমিক পাবলিক অফার তহবিল পাওয়ার দুই বছরের মধ্যে সেই অর্থ ব্যবহার করবে। তবে এখন পর্যন্ত এর ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।

কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০২২ অর্থবছরের জন্য শুধুমাত্র সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে, কোম্পানিটি একটি রূপান্তরযোগ্য বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পর ২৫০ কোটি টাকা নতুন বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছিল।

ফান্ড অ্যারেঞ্জার হিসেবে কোম্পানিটি জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। ৩১ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত উদ্যোক্তা এবং পরিচালকদের কাছে কোম্পানিটির শেয়ার রয়েছে ৩০.৬৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৯.৫০ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.২৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৯.৫৬ শতাংশ শেয়ার।