শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বন্ডে বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখা হয়েছে। কিন্তু এই নীতি শুধুমাত্র অতালিকাভুক্ত বন্ডের ক্ষেত্রে। বর্তমানে অনেকগুলো বন্ডই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কিন্তু তালিকাভুক্ত বন্ডে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগসীমার ভেতরে নাকি বাহিরে থাকবে, সে বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দেওয়া নেই।

তাই তালিকাভুক্ত বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো নীতি বিনিয়োগসীমার বাহিরে নাকি ভেতরে থাকবে তা নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। যার কারণে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন চাইলেও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারছে না। অথবা বিনিয়োগ করলেও তাতে করে আইন অমাণ্য হচ্ছে কি না তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।

বেশিরভাগ ব্যাংকই বন্ডগুলো ইস্যু করার সময়ে বিনিয়োগ করেছে। বন্ডে বিনিয়োগ করলে রিটার্ণ কম হলেও রিস্ক অনেক কম। তাই অনেক প্রতিষ্ঠানই শেয়ারবাজারের পাশাপাশি বন্ডে বিনিয়োগ করেছে। কারণ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে লোকসান হলেও বন্ডে বিনিয়োগ কম হলেও মুনাফা হয়। এতে করে লোকসান কিছুটা লাঘব হয়। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ডে বিনিয়োগ করেছে।

তালিকাভুক্ত বন্ডগুলো যদি এক্সপ্রোজার লিমিটেডের ভেতরে রাখা হয়, তাহলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো বড় সমস্যায় পড়বে। কারণ ব্যাংকগুলো মূলধনের ২৫ শতাংশ শেয়ারবাজার বিনিয়োগ করতে পারবে। কিন্তু বন্ডের মাধ্যমে যদি বেশি বিনিয়োগ হয়ে যায়, তাহলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে ভালোভাবে সাপোর্ট দিতে পারবে না।

ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্টরা বলছন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত বন্ড যদি বিনিয়োগসীমার বাহিরে থাকে, তাহলে ব্যাংকগুলো মূলধনের ২৫ শতাংশই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। এতে করে শেয়ারবাজারে তারল্য বৃদ্ধি পাবে। তাই এখন বন্ডগুলোকে বিনিয়োগসীমার বাহিরে রাখার জন্য শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি উঠেছে।

তালিকাভুক্ত বন্ডে বিনিয়োগের সমস্যাটি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নজরে এসেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে এক্সপ্রোজার লিমিটের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে ঠিক করতে হবে। বর্তমান গভর্ণর আসার পর থেকে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে অনেক কাজই হয়েছে। বিএসইসি যে সকল বিষয়ে সমস্যা মনে করে সমাধানের জন্য আবেদন করেছে, সেই সকল সমস্যাই সমাধান হয়েছে। আমরা আশা করছি তালিকাভুক্ত বন্ডে বিনিয়োগের বিষয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের সাথে একমত হবেন।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, তালিকাভুক্ত বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি নতুন সমস্যা। এই সমস্যা বিএসইসির সুদৃষ্টিতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি নির্ধারকদের সাথে কমিশনার মহদয়দের সাথে আলোচনা হয়েছে।

বিএসইসির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শেয়ারবাজার উন্নয়েনের জন্য ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ করেছে। এই বিষয়টিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদৃষ্টিতে দেখছেন। তাই বিএসইসির চেয়ারম্যানসহ সকল কমিশনারগণই প্রত্যাশা করছেন খুব শীঘ্রই তালিকাভুক্ত বন্ডের ক্ষেত্রে এক্সপ্রোজার লিমিট বিষয়টি সমাধান হবে। এর আগে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোরর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কস্ট প্রাইসের (ক্রয়মূল্য) ভিত্তিতে এক্সপোজার লিমিট গণনার বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।