শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও আস্থা ও তারল্য সংকট কাটছে না। তবে এদিন সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম এবং লেনদেন বেড়েছে। ওষুধ ও আইটি খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের(সিএসই) সূচক বেড়েছে ৬২ পয়েন্ট। মুলত প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়া সব মিলিয়ে টালমাটাল অবস্থায় দেশের পুঁজিবাজার। আর পুঁজিবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা বের হয়ে যাওয়ায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

এম সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের ইতিবাচক উত্থান দেখে গত জানুয়ারিতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করি। কিন্তু টানা দর পতনে এখন ১৮ লাখ টাকা লোকসান গুনছি। পুনঃবিনিয়োগ করে লোকসান কমানোর সুযোগ থাকলেও অ্যাকাউন্টে নগদ টাকা না থাকায় বিনিয়োগ করতে পারছি না।

বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, পুঁজিবাজারের প্রধান সমস্যা তারল্য সংকট। তারল্য সংকটের কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। বর্তমানে পুঁজিবাজারে ফান্ডের সঙ্কট বলে মনে করছেন তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে কিছু ফান্ডর ব্যবস্থা হলে এখান থেকেই পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে বলে তারা মনে করেন।

তারা বলছেন, পুঁজিবাজারে ফান্ডের সাপোর্ট থাকলে আইসিবিসহ সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখান থেকে শেয়ার ক্রয় করতে পারতো। এতে করে ফ্লোরে আটকে থাকা বিনিয়োগকারীরা নিজেদের ফান্ডগুলোকে অন্য কোন শেয়ারে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। এতে করে পুঁজিবাজারে তারল্যের চাকা সচল হতো। যা পুঁজিবাজারকে বর্তমান অবস্থান থেকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করতো।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক কাজী হোসাইন আলী বলেন, পুঁজিবাজারের অব্যাহত দর পতনের মুল সমস্যা তারল্য সংকট। গত ফেব্রুয়ারি থেকে টানা দর পতনে বিনিয়োগকারীদের পোর্টফলিও মাইনাসে আছে। যাদের মার্জিন অ্যাকাউন্ট তাদের অবস্থা আরো খারাপ। তারা বলেন, বিনিয়োগের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লোকসানে থাকায় তারল্য সংকটে নতুন বিনিয়োগে যেতে পারছে না বিনিয়োগকারীরা।

জানা গেছে, আজ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৭.১৭ পয়েন্ট বা ০.২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৩২.২৯ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৯.৮৯ পয়েন্ট বা ০.৭৩ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১২.৭২ পয়েন্ট বা ০.৫৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬৩.৯৯ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০২.৩৯ পয়েন্টে।

ডিএসইতে আজ ৩৩৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৩২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার। ডিএসইতে আজ ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৪৭টির বা ১৫.৪৬ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ৪১টির বা ১৩.৪৯ শতাংশের এবং ২১৬টির বা ৭১.০৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬২.৫৬ পয়েন্ট বা ০.৩৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪০২.২৪ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ১৩১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৫টির আর ৭৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।