শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের লেনদেনের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং গতিবিধি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গঠিত কমিটিকে এ আদেশ জারি হওয়ার ২০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে কোনো কারসাজি চক্র জড়িত রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টরা। এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানিটির সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে। একইসঙ্গে বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) অবহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিষয়টি সকল ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের অবহিত করতে বলা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রকিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক ফয়সাল ইসলাম।

আদেশে উল্লেখ করা হয়, বিএসইসি জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছু অস্বাভাবিক মূল্য এবং ভলিউম গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছে। কমিশন মনে করে এ বিষয়টি জনস্বার্থে তদন্ত করা প্রয়োজন। তদন্তে কোম্পানিটির সাম্প্রতিক অনিরীক্ষিত এবং নিরীক্ষিত আর্থিক বিবৃতি পর্যালোচনা, বাজার কারসাজির প্রচেষ্টা চিহ্নিত করা, ইনসাইডার ট্রেডিং সনাক্ত করা এবং অন্যান্য অসদাচরণ বা প্রতারণামূলক কার্যকলাপ হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।

তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অর্ডিন্যান্স নং xvii) এর সেকশন ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সালের ১৫নং আইন) এর ১৭ক ধারা এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন সুবিধাভঙ্গী ব্যবসায় গঠন) ১৯৯৫ এর বিধি ৬ অনুযায়ী কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হলো। তদন্ত কর্মকর্তারা এ আদেশ জারির ২০ কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকেই জেমিনি সি ফুডের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। গত ২ জানুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ২৮৮.৮০ টাকা। তবে দেড় মাসের ব্যবধানের অর্থাৎ ১৬ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩৩.৯০ টাকায়। এরপর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কিছুটা কমতে থাকে।

গত ৮ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারে ৩৫৯.৯০ টাকায় নেমে আছে। কিন্তু এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার আবারো বাড়তে থাকে। গত ৪ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩৮.৯০ টাকায়। পরবর্তীতে শেয়ারটির দাম পুনরায় কমতে থাকে। গত ২৬ মে শেয়ারটির দাম কমে দাঁড়ায় ২৯৬.৪০ টাকায়। তবে এরপর থেকে শেয়ারটির দাম ধারাবাহিক ভাবে বাড়তেই থাকে। গত ১৯ অক্টোবর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯৩.৪০ টাকায়।