শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: সপ্তাহজুড়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের ব্যাপক পতন হয়েছে। সূচকের সাথে কমেছে লেনদেনও। ঈদের পর থেকে দেশের পুঁজিবাজারে যেন অস্থিরতা কোনোভাবেই কাটছে না। পুঁজিবাজারে লাগামহীন পতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস (দরপতনের সর্বনিম্ন সীমা) বেঁধে দেওয়ার পর টানা ৫ দিন সূচকের উত্থান হয়। ফের জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকরের পর থেকে শুরু হয় সূচকের ব্যাপক দরপতন।

এছাড়া ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া হচ্ছে এমন গুজব সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় একটি চক্র। ফলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে কম দামেই নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেয়। এতে করে বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) অস্থিতিশীল হয়ে পরে পুঁজিবাজার। এতে করে বিনিয়োগকারীদের মূলধন (পুঁজি) উধাও হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়। কিন্তু সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে লেনদেন শেষে এই মূলধন গিয়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ০৩ হাজার ২৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে ১০ হাজার ২১০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা কমেছে।

ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ সপ্তাহের ব্যবধানে ১৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬১৪৮ পয়েন্টে। শরিয়াহ ভিত্তিক সূচক ‘ডিএসইএস’ ২৯পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩৪৫ পয়েন্টে এবং বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক ‘ডিএসই৩০’ ৭০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২১৯৪ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৪ কোটি ৫ লাখ টাকার। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল পাঁচ হাজার ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১ হাজার ৪৭৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকার।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির বা ১০.৬২ শতাংশের, কমেছে ২৮৭টির বা ৭৪.৩৫ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮টির বা ১৫.০৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।

অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) শেষ সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক ৪১৩ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ১২৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ২২ লাখ ৮৭ হাজার ৬৯৯ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯০ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৯৪২ টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩২৮টির, কমেছে ৫২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টি কোম্পানির শেয়ারের।