শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম, ঢাকা: পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসএস স্টিলের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২০) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে সিকিউরিটিজ আইন ও আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস) লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যবেক্ষণ করে এমন তথ্য পেয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

বিষয়টি এসএস স্টিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) জানানো হয়েছে। ডিএসইর পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে এসএস স্টিলের জবাব যুক্তিযুক্ত না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

ডিএসইর পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে এসএস স্টিল আয়কর গণনার প্রয়োজনীয় বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক হিসাব মানের কয়েকটি ধারা ((আইএএস)- ১২ এর ৪৬ ও ৮১(সি)) লঙ্ঘন করেছে।

এছাড়াও আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানি যে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) প্রকাশ করেছে, তা বিভ্রান্তিকর বলে মনে করে ডিএসই। কোম্পানিটির (আইএএস- ৩৩ এর ৬৬ অনুযায়ী) শুধু বেসিক ইপিএস ও ডাইলুটেড ইপিএস দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু কোম্পানিটি সেখানে সমন্বিত ইপিএস দেখিয়েছে। বিধি অনুযায়ী সমন্বিত ইপিএস দেখানোর সুযোগ নেই।

যদি সমন্বয় করার মতো কোনো ইপিএস থাকে, সেটাও সমন্বয় পরবর্তী বেসিক ইপিএস হবে। এসএস স্টিল কর্তৃপক্ষ শুধু ডিরেক্ট মেথডে নগদ প্রবাহ স্টেটমেন্ট তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি বিএসইসির নির্দেশনার ধারা একটি ধারা (২০১৮ সালের ২০ জুন বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার ধারা ৪(৪)(ই)) লঙ্ঘন করেছে।

ডিএসইর পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে, কোম্পানির আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে ২১.৫৪ শতাংশ। এক্ষেত্রে ইপিএসের তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এর কারণ উল্লেখ করেনি। একইভাবে নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো হিসাবেও তাৎপর্যপূর্ণ পার্থক্য হলেও এর কারণ উল্লেখ করেনি। ফলে কোম্পানিটি বিএসইসির একটি ধারা (২০১৮ সালের ২০ জুন বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার ধারা ৪(১)) লঙ্ঘন করেছে।

এদিকে, কোম্পানিটি আয়ের হিসাবের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস-১৮) প্রয়োগ করেছে। কিন্তু এই ধারাটি আগেই বিলুপ্ত করা হয়েছে। ইনিস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএবি) এক নির্দেশনায়, ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর আইএএস-১৮ এর পরিবর্তে আয়ের হিসাবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএফআরএস) ১৫ ব্যবহারের কথা বলেছে।

যা ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানি কর্তৃপক্ষ রিলেটেড পার্টির সঙ্গে লেনদেনের বিষয়ে আর্থিক প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করেনি। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক হিসাব মানের ধারা (আইএএস-২৪ এর প্যারাগ্রাফ ১৮) লঙ্ঘন করেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতির বিষয়ে জানতে চাইলে এসএস স্টিল কোম্পানির সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর কিছু তথ্য জানতে চেয়েছে ডিএসই। সেই অনুযায়ী তাদের জবাব দেওয়া হয়েছে।